রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) এক কর্মীসহ দুইজনকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার বড় হাড়িকাবার ভালেদি ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন– উপজেলার কাট্টলী কুকিছড়া গ্রামের সময় মনি চাকমার ছেলে বিদ্যাধন চাকমা (৪৫) ও বড় হাড়িকাবার ধুধুকছড়া গ্রামের লেংগ্যা চাকমার ছেলে ধন্য মনি চাকমা (৩৫)।
ইউপিডিএফের অভিযোগ, সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী। তবে জেএসএস অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইউপিডিএফের রাঙামাটি জেলা ইউনিটের সংগঠক সচল চাকমা অভিযোগ করেন, লংগদুতে জেএসএস সন্তু লারমা গ্রুপের সন্ত্রাসীরা ইউপিডিএফের এক সদস্য ও এক সমর্থককে গুলি করে হত্যা করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে লংগদুর বড়হাড়িকাবার ভালেদি ঘাটের পার্শ্ববর্তী স্থানে সাংগঠনিক কাজে নিয়োজিত ইউপিডিএফ কর্মীদের উপর হামলা চালায় সন্তু লারমা গ্রুপের সাতজনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী। এতে ঘটনাস্থলে ইউপিডিএফ সদস্য বিদ্যা ধন চাকমা ওরফে তিলক ও সমর্থক ধন্য মনি চাকমা নিহত হন।
এ ঘটনাকে ‘কাপুরুষোচিত ও ন্যক্কারজনক’ উল্লেখ করে বিবৃতিতে সচল চাকমা বলেন, “ইউপিডিএফের নেতৃত্বে সিএইচটি রেগুলেশন ১৯০০ বাতিলের ষড়যযন্ত্রসহ বান্দরবানে বম জাতিসত্তার ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনে বাধা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে সরকারের কৃপা লাভের আশায় সন্তু লারমা আবারও তার খুনি বাহিনীকে দিয়ে ইউপিডিএফের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হত্যাকাণ্ড শুরু করেছেন।
“তার নির্দেশে আজকে লংগদুতে ইউপিডিএফের এক কর্মী ও এক সমর্থককে হত্যা করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের কাছে সন্তু লারমা একজন খুনি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবেন।”
এদিকে, হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে জেএসএস লংগদু শাখার সাধারণ সম্পাদক মনি শংকর চাকমা বলেন, “ওই এলাকায় আমাদের কোনও সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই। আমাদের জড়িত থাকার কোনও কথাই আসেনি। এটা এক ধরনের জিঘাংসার কথা। এই ঘটনা তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলও হতে পারে।”
রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ জানান, “লংগদুতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুজন নিহতের খবর পেয়েছি। ওসি ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছে। ফিরে এলে বিস্তারিত জানা যাবে।”
সোমবার অবরোধ
জোড়া খুনের প্রতিবাদে আগামী সোমবার জেলায় আধাবেলা সড়ক ও নৌ-পথ অবরোধের ডাক দিয়েছে ইউপিডিএফ।
শনিবার বিকালে সদর উপজেলার কুতুকছড়িতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সমাবেশে ইউপিডিএফ সংগঠক বাবলু চাকমার সভাপতিত্বে ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নিশি চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক নিকন চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ধর্মশিং চাকমা।
সমাবেশে বক্তারা এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সন্তু লারমার দল জেএসএসকে দায়ী করে বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন ও আন্দোলন বানচালের জন্য বিদ্যাধন চাকমা ও ধন্যমনি চাকমাকে হত্যা করা হয়েছে।
