বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বিদ্যমান ‘কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ থেকে বিস্তৃত কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বে’ উন্নীত হতে ২১টি দলিল সই হয়েছে। এর মধ্যে ২টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) নবায়ন ও ৭টি প্রকল্পের ঘোষণা রয়েছে।
বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে বুধবার উভয় দেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনা হয়। এরপরই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের উপস্থিতিতে দলিলগুলো সই হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার সকালে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের জন্য গ্রেট হল অব দ্য পিপলে পৌঁছান। সেখানে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পাশাপাশি বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে উভয় নেতার মধ্যে আলোচনা হয়।
স্বাক্ষরিত দলিলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ও চায়না মিডিয়া গ্রুপের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক এবং সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়।
অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং খাতে সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, ডিজিটাল অর্থনীতি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সহায়তা, ষষ্ঠ ও নবম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণ, বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য রপ্তানি এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়ে চুক্তি সই হয়।
দলিলগুলো হচ্ছে- ডিজিটাল অর্থনীতিতে বিনিয়োগ সহযোগিতা জোরদার, চায়না ন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রেগুলেটরি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনএফআরএ) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে ব্যাংকিং এবং বীমা নিয়ন্ত্রণ, বাংলাদেশ থেকে চীনে তাজা আম রপ্তানির জন্য উদ্ভিদ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত (ফাইটোস্যানিটারি) উপকরণ বিষয়ে একটি প্রটোকল সই করে দুই দেশ।
এছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়ন নীতি সহায়তা, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সহায়তা বিষয়ে দুইটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। বাংলাদেশে প্রকল্পে চায়না-এইড ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারের ‘সম্ভাব্যতা সমীক্ষা’ বিষয়ে আলোচনার একটি সাইনিং অব মিনিটস (কার্যবিবরণী) সই হয়।
চীনের সহায়তায় ষষ্ঠ ও নবম বাংলাদেশ-চায়না মৈত্রী সেতু সংস্কার প্রকল্পের এবং নাটেশ্বর প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা পার্ক প্রকল্পে চায়না-এইড কনস্ট্রাকশনের সম্ভ্যাবতা সমীক্ষা বিষয়ে চিঠি বিনিময় হয়।
মেডিকেল সেবা এবং জনস্বাস্থ্য, অবকাঠামোগত সহযোগিতা, গ্রিন অ্যান্ড লো-কার্বন উন্নয়ন, বন্যার মৌসুমে ইয়ালুজাংবু (ব্রহ্মপুত্র) নদীর হাইড্রোলজিক্যাল তথ্য বাংলাদেশকে দেওয়ার বিধি, চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি) ও বাসসের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়।
সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের মধ্যে স্মারক সই ছাড়াও উভয় দেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়, টেকসই অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
প্রকল্প ৭টি হচ্ছে – চীন-বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বিষয়ে যৌথ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সমাপ্তি, চীন-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তি ত্বরান্বিতকরণ নিয়ে আলোচনা শুরু, ডিজিটাল কানেক্টিভিটি প্রকল্পের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্কের আধুনিকীকরণের সমাপ্তি, ডাবল পাইপ লাইন প্রকল্পের সঙ্গে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ের ট্রায়াল রান সমাপ্তির ঘোষণা।
আরও আছে রাজশাহী ওয়াসা সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট চালু, শানদং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুরের এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর। বাংলাদেশে লুবান ওয়ার্কশপ নির্মাণের ঘোষণা। বাসস।
