দেশের মানুষ নৈরাজ্যের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে সংস্কৃতিকর্মীদের দায় অনেকখানি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।
শুক্রবার রাঙামাটি শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা উদীচীর নবম সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
উদীচীর বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী এবং ছাত্র-যুব সংগঠকরা ‘পাহাড়ে-সমতলে গেয়ে যাই গান, অধিকারে প্রতিরোধে জেগে ওঠো প্রাণ’ স্লোগানে সকালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চত্বর থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করে। শোভাযাত্রাটি পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এসে মিলিত হয়।
এরপর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় অমিত রঞ্জন দে বলেন, “একসময় আমরা পাকিস্তানের ২২ পরিবারের বিরুদ্ধে লড়েছি। এখন ২২ হাজার পরিবার দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করছে।
“বাজারে এখন পকেট ভর্তি টাকা নিয়ে গেলেও ব্যাগ ভরে বাজার আনতে পারি না। সেখানে দেশের কৃষকের কী অবস্থা, ভেবে দেখুন। গ্রামাঞ্চলে কৃষকরা ৫-১০ টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রি করছেন। সেই বেগুন ঢাকার বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। মাঝখানে এক শ্রেণির মধ্যস্বত্বভোগী তৈরি হয়েছে।”
দেশের মানুষ নৈরাজ্যের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে অমিত রঞ্জন বলেন, “আমরা যারা সংস্কৃতিকর্মী, প্রগতি ও সাম্যের কর্মী, তাদের এই পরিস্থিতিতে দায় অনেকখানি।”
সম্মেলনে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক বলেন, “এক শ্রেণির মানুষ আছে, যারা এই দেশকে মেনে নিতে পারেনি। তারা এখনও এই দেশকে অস্বীকার করে, পাকিস্তানের তোষণ করে। আরেক শ্রেণি আছে, যারা অঢেল সম্পদের মালিক।
“এই দুই শ্রেণিকে থামাতে কাউকে না কাউকে দাঁড়াতে হবে। উদীচী দাঁড়াতে চায়।”
সাংবাদিক-লেখকদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (ডিএসএ) মামলা দিয়ে হয়রানি-কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে অভিযোগ করেন উদীচীর সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমরা গণতন্ত্রহীনতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। অথচ ধর্মীয় সব আয়োজন চলছে। বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে সেসব কাজ, যা আমাদের বিকশিত করে।”
দেশের সম্পদ রক্ষা, প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে উদীচীর অবদান রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন সংগঠনটির এই নেতা।
বিকালে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সম্মেলন শেষ হবে বলে জানিয়েছে উদীচী।