মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে সম্প্রতি কয়েক দফায় পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও সেনাবাহিনীর ২৮৮ সদস্যকে ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি।
বৃহস্পতিবার সকালে দুদেশের প্রতিনিধিদলের উপস্থিতিতে ইমিগ্রেশন ও যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শেষে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কক্সবাজারের নুনিয়াছড়াস্থ বিআইডব্লিটিএ ঘাট থেকে টাগবোটে করে তাদের তুলে দেওয়া হয় গভীর সাগরে অবস্থানরত মিয়ানমারের জাহাজে।
এর আগে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১১টি বাসে করে মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপির এই ২৮৮ সদস্যকে বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে নুনিয়ারছড়াস্থ বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে আনা হয়। এরপর শুরু হয় যাচাই-বাছাই কার্যক্রম।
এরই মধ্যে ঘাটে উপস্থিত হয় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল। চলে হস্তান্তর প্রক্রিয়ার বৈঠক। এতে অংশ নেন মিয়ানমারের পক্ষে অংশ নেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ও বিজিপির পাঁচ সদস্য। বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা বৈঠকে অংশ নেন।
ঘণ্টাব্যাপী যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শেষে সকাল ৭টার দিকে মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপির সদস্যদের টাগবোটে করে তুলে দেওয়া হয় সাগরে অবস্থানরত মিয়ানমারের জাহাজে।
এ নিয়ে গত তিন মাসে মানবিক বিবেচনায় বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপি সদস্যসহ দেশটির ৬১৮ নাগরিককে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হলো।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, প্রথম দফায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি উখিয়ার ইনানীস্থ নৌবাহিনীর জেটি দিয়ে মিয়ানমারের সেনা, বিজিপি ও কাস্টমস কর্মকর্তাসহ ৩৩০ জনকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। গত দেড়মাসে নতুন করে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপির আরও ২৮৮ জন। তাদেরকে নানা প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার সকালে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে মিয়ানমারে কারাভোগ শেষে বুধবার দুপুরে দেশটির জাহাজে করে দেশে ফেরে বাংলাদেশের ১৭৩ নাগরিক। তাদের মধ্যে ১২৯ জন কক্সবাজারের, ৩০ জন বান্দরবানের, সাতজন রাঙ্গামাটির বাসিন্দা। এছাড়া খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, নরসিংদী ও নীলফামারীর বাসিন্দা আছেন একজন করে।
বিজিবির তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারে ফেরত যাওয়া দেশটির সেনা ও বিজিপির ২৮৮ সদস্য গত ১ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যবর্তী সময়ে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন।