রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ভ্যালি উপত্যকায় আগামী তিন দিন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন।
মঙ্গলবার সকালে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানান রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান।
তিনি বলেন, “খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে রাঙ্গামাটির সাজেকে ১ হাজার ৪০০ পর্যটক আটকা পড়েছিলেন। তাদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে আমাদের অনেক বেগ পেতে হয়েছে।
“তাই পরিস্থিতি বিবেচনায় সাজেকে আগামী তিন দিন সকল প্রকার পর্যটকদের না যাওয়ার জন্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।”
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনে কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার এফএম ফরহাদ হোসেনে, সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা, অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (সার্বিক) মো. মোতাছেম বিল্যাহ, রাঙ্গামাটি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমাসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
এসময় পুলিশ সুপার এসএম ফরহাদ হোসেন সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, “সংঘাত সৃষ্টিকারী যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের কাছে অনেক তথ্য, ভিডিও ও ছবি এসেছে; আমরা এগুলো নিয়ে কাজ করছি।
“আপনাদের কাছে যদি কোনো তথ্য থাকে ছবি বা ভিডিও থাকে তাহলে সঠিক প্রমাণ দিয়ে তথ্য দিবেন। আমরা কাউকে ছাড় দেব না।”
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বিকালে সংঘর্ষের জের ধরে রাতভর জেলা সদরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। বিকালের সংঘর্ষ ও রাতের গোলাগুলির ঘটনায় তিনজন নিহত হয়।
দীঘিনালার ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে রাঙ্গামাটি শহরে মিছিল বের করে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিল থেকে ‘ইটপাটকেল ছোঁড়া’কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বাধে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে। সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কিছু যানবাহনের ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
শুক্রবারের ওই সংঘর্ষে অন্তত একজন নিহত ও দুই পক্ষের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাঙ্গামাটিতে ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন।
অন্যদিকে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণহানি ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে এবং এসব ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবিতে শুক্রবার খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে ৭২ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয় ‘বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতা’।