ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের স্বার্থে সাবেক তিন সংসদ সদস্যসহ নয়জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (১৬ অক্টেবর) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত এ আদেশ দিয়েছে।
যাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান ও তার স্ত্রী রওনক রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ ও তার স্ত্রী রুহল আরা রহিম, সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার, তার স্ত্রী ফারহানা জাহান মালা, দুই মেয়ে সামিয়া জাহান অন্তরা ও মাঈসা জাহান অহনা এবং ছেলে জাবীর চাকলাদার।
দুদকের পক্ষে এদিন তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার পৃথক আবেদন করা হয়। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর ও মো. রেজাউর করিম রেজা শুনানি করেন।
সাবেক এমপি আজাদের আবেদনে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতপূর্বক নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানাধ চলছে।
আবুল কালাম আজাদ গোবিন্দগঞ্জে আনুমানিক ১০০ কোটি টাকার জমি, ৬ তলা বাড়িসহ ৬টি ফ্ল্যাট, বগুড়া শহরের জলেশ্বরী তলায় দুটি বাড়ি, ঢাকার মোহাম্মদপুরে একটি বাড়ি, গাজীপুরে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিসহ ২০টির মতো বাস ও ট্রাক ক্রয় করেছেন বলে গোপন সূত্রে জানা যায়।
মো. আবুল কালাম আজাদ এবং তার স্ত্রী রুহুল আরা রহিম অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি হস্তান্তর করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কাজ ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন।
শাহীন চাকলাদারের আবেদনে বলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, ক্ষমতার অপব্যবহার, নানা অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে শত শত কোটি টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগটির অনুসন্ধান চলছে। অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমন রহিত করা একান্ত প্রয়োজন।
সাবেক এমপি শওকতের আবেদনে বলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, জমি দখল, ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতপূর্বক নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। গোপন ও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, শওকত হাচানুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে (বরিশালের আগুরপুর রোড, রুপাতলী, জাগুয়া, দক্ষিণ আলেকান্দায়। বরগুনার কাঠালতলী, মাদারতলী, রায়হানপুর, গহরপুর, চরলাঠিমারা; ঢাকার নলটোনা, নতুন শহর এলাকা ছাড়াও অন্যান্য এলাকায়) এবং দেশের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, কানাডাসহ অন্যান্য দেশে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে।
অভিযোগসংশ্লিষ্ট শওকত হাচানুর রহমান ও তার স্ত্রী রওনক রহমান দেশ ছেড়ে পলায়ন করার চেষ্টা করছেন মর্মে অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কাজ ব্যাহত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
