পুলিশের সাবেক দুই মহাপরিদর্শকসহ (আইজিপি) তিন কর্মকর্তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত।
তারা হলেন– সাবেক আইজিপি শহীদুল হক ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হিল কাফী।
এদের মধ্যে সাবেক দুই আইজিপিকে পৃথক হত্যা মামলায় এবং কাফীকে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।
বুধবার সকালে পুলিশ তাদের আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করে। অন্যদিকে তারা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আকতারুজ্জামানের আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই বিকাল ৪টার দিকে মোহাম্মদপুর থানার বছিলায় ৪০ ফিট চৌরাস্তায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয় মুদি দোকানি আবু সায়েদ। একইদিন বিকালে নিউমার্কেট থানাধীন নীলক্ষেত এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ।
ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর মুদি দোকানি আবু সায়েদ নিহতের ঘটনায় ১৩ আগস্ট আদালতে হত্যা মামলা করেন এস এম আমীর হামজা নামে এক ব্যক্তি। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ ৭ জনকে আসামি করা হয়।
অন্যদিকে, ব্যবসায়ী ওয়াদুদ নিহতের ঘটনায় তার শ্যালক আব্দুর রহমান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সাবেক আইজিপি শহীদুল হকসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
এই দুই হত্যা মামলায় সাবেক আইজিপি শহীদুল হক ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এদিকে, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হিল কাফীকে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে হাজারীবাগ থানায় দায়ের করা একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। এই মামলায় আসামি করা হয়েছে সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদকেও।
এই মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, কাফী ঢাকা মহানগর পুলিশের ধানমন্ডি জোনে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার পদে থাকাকালে মামলার অপর আসামি সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, পুলিশ কর্মকর্তা মারুফ হোসেন সরদার, হাজারীবাগ থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া ও আসামি মাইনুদ্দিন কাজলসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন মিলে ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ধানমন্ডি থেকে মামলার বাদীকে অপহরণ করে। আসামিরা বাদীকে হাজারীবাগ থানাধীন অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে বিপুল অঙ্কের মুক্তিপণ বাদীর পরিবারের কাছ থেকে আদায় করে।
পৃথক মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক দুই আইজিপি– শহীদুল হক ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হিল কাফীকে বুধবার সকালে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ করে রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। অন্যদিকে আসামিরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
শুনানি শেষে বিচারক আসামিদের জামিন আবেদন নাকচ করে আইজিপি শহীদুল হকের বিরুদ্ধে সাত দিন এবং সাবেক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও আব্দুল্লাহ হিল কাফীর বিরুদ্ধে আট দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।