পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের পরিবারের মালিকানায় থাকা গুলশানের চারটি ফ্ল্যাট ক্রোক করেছে দুদকের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিট। অভিজাত এলাকার এই ফ্ল্যাটগুলো ভাড়া দিয়ে সেই অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে দুদকের।
এসব ফ্ল্যাটের মধ্যে তিনটির মালিক বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জীশান মির্জা, অন্যটি ছোট মেয়ের হয়ে তার নিজের নামে কেনা।
সোমবার দুদকের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিটের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদের নেতৃত্বে একটি দল ফ্ল্যাটগুলো ক্রোকের পর জিনিসপত্রের তালিকা তৈরি করে বলে জানান দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন।
মঞ্জুর মোর্শেদ জানিয়েছেন, গুলশান-১ এর ১২৬ নম্বর সড়কের র্যাংকন আইকন টাওয়ারের এই চারটি ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়া গেলে অর্জিত অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।
এর আগে রবিবার বেনজীর পরিবারের মালিকানায় থাকা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের একটি বাংলো বাড়ি ক্রোক করা হয়।
দুদক সচিব সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, বেনজীর আহমেদের গুলশানের চারটি ফ্ল্যটের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দুদকের একজন পরিচালককে রিসিভার নিয়োগ করা হয়েছে। ঢাকা জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ও দুদকের একজন পরিচালকসহ একটি টিম বাড়িটির সবকিছুর তালিকা তৈরি করেছে। সে অনুযায়ী দায়িত্ব বুঝে নিয়েছে।
গত ২৭ জুন আদালতের নির্দেশনায় দুদককে রিসিভার নিয়োগ দেওয়া হয়।
ফ্ল্যাটের রিসিভার হিসেবে আদালত থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ক্রোক করা এসব সম্পত্তির সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য আমাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রিসিভার নিয়োগের অর্থ হলো, যদি ক্রোক করা সম্পদ থেকে অর্থ আয়ের সুযোগ থাকে তবে সেই ব্যবস্থা চালু রাখা এবং সেই অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া।
“ফ্ল্যাটে যা যা পাওয়া গেছে সকল জিনিসপত্রের ইভেনটরি করেছি, সেই তালিকা কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। যদি ফ্ল্যাটগুলো ভাড়া দেওয়া যায় তাহলে অর্জিত অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।”
গুলশানের র্যাংকন টাওয়ারটি ১৯ দশমিক ৭৫ কাঠা জমির উপর তৈরি। ১৫ তলা এই ভবনটিতে রয়েছে ২৫টি অ্যাপার্টমেন্ট, দুটি বেজমেন্ট ও ৩৭টি কার পার্কিং।
চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার ছয় মাসের মধ্যেই ২০২৩ সালের ৫ মার্চ একসঙ্গে এই ভবনের চারটি ফ্ল্যাট কেনেন বেনজীর। এর মধ্যে দুটি ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ২৪২ বর্গফুট, অন্য দুটির ২ হাজার ৩৫৩ বর্গফুট।
সম্পদ ক্রোক হলেও দুদকের দুই দফা তলবে সাড়া দেননি বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যরা। তৃতীয়বার তলবের আইনি সুযোগ না থাকায় গত ২ জুলাই বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিশান মীর্জা, বড় কন্যা ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর ও মেজো কন্যা তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য চেয়ে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেয় সংস্থাটি।