সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের দুই ভাই হারিছ আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদ ওরফে জোসেফের নামে ইস্যু করা চারটি জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।
এর ফলে এসব কার্ডের আওতায় দেশে যেসব সুবিধা মিলত, তার কোনোকিছুই আর পাবেন না এই দুই ভাই।
মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ শাখার পরিচালক শরীফুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, আজিজ আহমেদের দুই ভাই হারিছ আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদ জোসেফ নিজেদের নামের পাশাপাশি বাবা-মার নামও পরিবর্তন করেছেন।
হারিছ আহমেদ তার নাম পাল্টে হয়েছেন মোহাম্মদ হাসান। তোফায়েল আহমেদ জোসেফ নাম পাল্টে পরিচিতি নিয়েছেন তানভীর আহমেদ তানজীল হিসেবে।
অভিযোগ আছে, তাদের এনআইডির তথ্য পরিবর্তনে আজিজ আহমেদ সুপারিশ করেছিলেন।
এর আগে গত জুন মাসে তৎকালীর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন যে, আজিজ আহমেদের দুই ভাইয়ের এনআইডি জালিয়াতির বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
নাম পাল্টে এনআইডি দেওয়ার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
আজিজ আহমেদ ২০১৮ সালের জুন মাসে বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পাওয়ার পর তিন বছর ওই পদে ছিলেন। তার আগে তিনি বিজিবির মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেন।
চার তারকা জেনারেল আজিজ অবসর নেন ২০২১ সালের জুন মাসে।
গত মে মাসে সাবেক এই জেনারেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তার সঙ্গে তার পরিবারও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিলেন। ফলে তারা যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারবেন না।
আজিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে তার দুর্নীতিকে প্রধান কারণ হিসাবে দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। পাশাপাশি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো নষ্ট এবং এগুলোর ওপর জনগণের আস্থা কমে যাওয়ায় তার ভূমিকার কথাও বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের অবমূল্যায়ন এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়ার ওপর জনগণের আস্থা কমে যাওয়ার পেছনে আজিজ আহমেদের কর্মকাণ্ডের ভূমিকা আছে।
এতে বলা হয়, আজিজ আহমেদ তার ভাইদের বাংলাদেশে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি এড়াতে সহায়তা করেন। সেনাপ্রধান হিসাবে সরকারি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় দুর্নীতি করেন। এছাড়া সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন কাজ দুর্নীতির মাধ্যমে পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভাইদের সঙ্গে কাজ করেন তিনি।
ঘুষ নিয়ে সরকারি নিয়োগ দিতেও আজিজ আহমেদ ভূমিকা রাখেন বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়।