ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে গত দুই দিনে এক কিশোরী ও তিন নারীসহ ছয় জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তারা হলেন– কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার দিয়াডাঙ্গা গ্রামের আমজাদ হোসেনের মেয়ে রিয়া মনি (১৮), দিনাজপুর সদর উপজেলার মামুদপুর গ্রামের মো. মইনুল রহমানের ছেলে মো. মঞ্জরুল ইসলাম (২২), গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার উত্তর হরিপুর গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে মাসুদ (৩২), বগুড়ার শেরপুর উপজেলার কাজর খামারকান্দি এলাকার মাসুম আলীর স্ত্রী সুস্মিতা খাতুন (২৩), টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার ইসপিনজারপুর এলাকার মো. হাবুল মিয়ার মেয়ে মোছা. সুরমা আক্তার (২০) ও সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর থানার রামখেরা গ্রামের সাচ্চু মিয়ার মেয়ে নুপুর (১৬)।
শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার বিকাল পর্যন্ত আশুলিয়ার বাইপাইল, পলাশবাড়ী, জামগড়া ছয়তলা, কান্দাইল ও কাঠগড়া পশ্চিমপাড়া থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমান।
এদের মধ্যে কিশোরী ও তিন নারীর সবাই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
বাকি দুজনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে মারধরে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়ছে। আরেকজন স্ট্রোকজনিত কারণে মারা গেছে বলে ধারণা পুলিশের।
পরিদর্শক মাসুদুর রহমান বলেন, আমরা শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থান থেকে ছয়টি লাশ উদ্ধার করেছি। শনিবার বেলা ৩টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী নিয়ে টানাটানির জেরে মারামারির ঘটনায় মো. মঞ্জরুল ইসলাম নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। তিনি ডিপজল বাস কাউন্টারে সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মানিক (২০) নামে এক পরিবহন শ্রমিককে আটক করা হয়েছে।
তিনি জানান, পরে শনিবার বিকাল ৫টার দিকে আশুলিয়ার গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল থেকে রিয়া মনি নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকার ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে শনিবার দুপুরে আশুলিয়ার বাইপাইল মোড় এলাকার পেয়ারলেস হাসপাতালের সামন থেকে মাসুদ নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয় জানিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, স্ট্রোকজনিত কারণে মাসুদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
মাসুদুর রহমান বলেন, শনিবার ভোর রাতে আশুলিয়ার কান্দাইল পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে সুস্মিতা খাতুন নামে আরও এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সুস্মিতার স্বামী মাসুম আলী বলছেন, তার স্ত্রী ছোট বেলা থেকেই মানষিক ভারসাম্যহীন ছিল। গত ৮ রমজান তার বাবা বাসা থেকে বের হয়ে গেলে তার অসুস্থতা আরও বেড়ে যায়। তার বাবাকে এর পর থেকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ কারণে সুস্মিতা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, এর আগে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে আশুলিয়ার সরকার মার্কেট এলাকার নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতাল থেকে সুরমা আক্তার নামের এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারও আগে শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে আশুলিয়ার কাঠগড়া পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় নুপুর নামে এক কিশোরীর মরদেহ। এই দুজনও গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে তাদের পরিবার।
পরিদর্শক মাসুদুর রহমান বলেন, মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এসব ঘটনায় আইনগতভাবে যেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সেভাবেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।