কক্সবাজারে সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নে পাহাড়ধসে এক নারী ও তার শিশু সন্তান নিহত হয়েছে। অন্যদিকে, উখিয়া উপজেলার একটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড়ধসে নিহত হয়েছে একটি রোহিঙ্গা পরিবারের সদস্য তিন ভাই।
বৃহ্স্পতিবার মধ্যরাতে ঝিলংজা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ ডিককুল গ্রামে এবং উখিয়ার ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে।
সদর উপজেলায় নিহতরা হলেন– সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডিককুল গ্রামের মিজানুর রহমানের স্ত্রী আঁখিমনি এবং তার দুই শিশু কন্যা মিহা জান্নাত নাঈমা ও লতিফা ইসলাম।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিহতরা হলেন– উখিয়ার ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ই-২ ব্লকের কবির আহমেদের তিন ছেলে– আব্দুর রহিম, আব্দুল হাফেজ ও আবদুল ওয়াহেদ।
ডিককুল গ্রামে পাহাড়ধসের ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুল করিম সিকদার জানান, ভারি বৃষ্টির মধ্যে রাত ২টার দিকে মিজানের বাড়ির দিক থেকে একটি পাহাড়ধসের বিকট শব্দ শুনতে পায় তারা। পরে গিয়ে দেখেন মাটিচাপা পড়েছে মিজানের পরিবার। তাৎক্ষণিকভাবে মিজানকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। পরে ভোররাতের দিকে কক্সবাজার দমকল বাহিনীর সহযোগিতায় উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে মিজানের স্ত্রী ও দুই মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, মিজানের বাড়িটি পাহাড়ের পাদদেশে। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে শুরু হওয়া ভারি বৃষ্টিতে মাটি নরম হয়ে যায়। পরে মধ্যরাতে উপর থেকে পাহাড়ের মাটিধসে তার বাড়িতে পড়ে।
এদিকে, কক্সবাজার ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার সামশুদ্দৌজা নয়ন জানিয়েছেন, ভারি বর্ষণে উখিয়ার ১৪ নম্বর হাকিম পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড়ধসে তিনটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকেরা বিধ্বস্ত ঘর-বাড়িতে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
গত বুধবার থেকে কক্সবাজারে কখনো মাঝারি, কখনো ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। ভারি বৃষ্টিতে বৃহস্পতিবার জেলা শহরসহ বেশ কিছু গ্রামে মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে অনেকের বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে। এতে এলাকায় জনজীবনে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানান, বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৩৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা চলমান মৌসুমে কক্সবাজারে একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড।