এক সপ্তাহের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে স্টোর রেন্ট বা ড্যামারেজ চার্জ মওকুফ সুবিধা পেয়েছেন বাংলাদেশের পোশাক শিল্প মালিকরা।
এর ফলে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা, কারফিউ এবং ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকার কারণে ১৮ জুলাই থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আটকা পড়া বিপুল আমদানি পণ্যের জন্য তাদের বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে না।
মঙ্গলবার এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানায় নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়।
উপসচিব নজরুল ইসলাম আজাদের সই করা ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিজিএমইএ’র আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি পোশাক শিল্পের আমদানি করা পণ্যের যেসব চালান ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে এবং আসবে সেগুলো খালাসের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাতদিনের স্টোররেন্ট/ডেমারেজ চার্জ মওকুফে সম্মত হয়েছে সরকার।
তবে এক্ষেত্রে শর্ত হলো, আগামী ১৪ আগস্টের মধ্যে যারা বন্দর থেকে মালামাল খালাস করে নেবে না, তারা এই সুবিধা পাবে না।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ১৬ জুলাই থেকে পরবর্তী ২০ দিনের মধ্যে যারা গার্মেন্ট শিল্পের পণ্য এনেছেন কিন্তু ছাড় নেননি তারা এই সুবিধা পাবেন। ফলে এখন পর্যন্ত অন্য আমদানিকারকদের এই সুবিধা পাওয়ার সুযোগ নেই।
নিয়ম অনুযায়ী, জাহাজ থেকে নামানোর পর একটি আমদানি পণ্যভর্তি কনটেইনার চার দিন পর্যন্ত বিনা মাশুলে বন্দর ইয়ার্ডে রাখার সুযোগ পান আমদানিকারকরা। পঞ্চম দিন থেকে ২০ ফুট দীর্ঘ একটি কনটেইনার ইয়ার্ডের রাখার জন্য প্রথম সপ্তাহে প্রতিদিন ৬ মার্কিন ডলার স্টোর রেন্ট গুনতে হয়। পরবর্তী সপ্তাহে প্রতিদিন একই আকারের কনটেইনারের জন্য ১২ ডলার এবং ২১তম দিন থেকে দৈনিক ২৪ ডলার করে ভাড়া দিতে হয়।
৪০ ফুট লম্বা কনটেইনারের ক্ষেত্রে এর দ্বিগুণ ভাড়া পরিশোধ করতে হয়।
দেশে সৃষ্ট সহিংস পরিস্থিতি ও কারফিউ জারির কারণে গত ১৮-২৪ জুলাই পর্যন্ত বন্দরের প্রায় সব আমদানি পণ্যের কন্টেইনারই আটকা ছিল। নির্ধারিত সময়ে ছাড় নিতে না পারায় সেসব কন্টেইনারে স্টোররেন্ট আরোপ হয়।
সেই বাড়তি খরচ থেকে বাঁচতে বিজিএমইএ ২৪ জুলাই আবেদন করে নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের কাছে। এর ধারাবাহিকতায় রবিবার পোশাক শিল্প মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন নৌ পরিবহন মন্ত্রী খালিদ মাহমুদ। সেখানেই সাত দিনের স্টোররেন্ট মওকুফের সিদ্ধান্ত হয়।
সেই সিদ্ধান্তই বুধবার প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ হয়েছে।
পোশাক শিল্প ছাড়া অন্য পণ্যের মাশুল মাফের সিদ্ধান্ত আসেনি কেন জানতে চাইলে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকেই স্টোররেন্ট মওকুফের দাবিটি প্রথমে তোলা হয়েছিল। এরপর অন্যরা আলাদাভাবে দাবি তোলে।
“নৌ পরিবহন মন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন যে, অন্য খাতগুলোও এই ছাড়ের সুবিধা পাবে। সেক্ষেত্রে আলাদাভাবে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। আশা করছি কাল বুধবারই সেই প্রজ্ঞাপন আসবে। ফলে সবাই স্টোররেন্ট ছাড়ের সুবিধা পাবেন, এতে চিন্তার কিছু নেই।”