Beta
বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫

বিশেষ ব্যবস্থায় সেন্ট মার্টিন গেল পণ্যবাহী ৭ ট্রলার

ss-troller to saint martin-sea-coxbazar-121224 (4)
[publishpress_authors_box]

মিয়ানমারে সংঘাতের জেরে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌরুটসহ নাফ নদীতে নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সেন্ট মার্টিনে নিত্যপণ্য পৌঁছাতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার কোস্ট গার্ডের নিরাপত্তায় সেন্ট মার্টিন গেছে পণ্যবাহী সাতটি ট্রলার।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ট্রলারগুলোয় অন্তত ৫০ জন যাত্রী সেন্ট মার্টিন গেছেন।

মঙ্গলবার রাতে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন রুটে কোস্ট গার্ডের পক্ষ থেকে ট্রলার মালিক ও চালকদের নাফ নদীতে সব ধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়। বুধবার সকালে উপজেলা প্রশাসন নৌযান চলাচলে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে। নাফ নদীর বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে সতর্কতাও জারি করে।

তবে বঙ্গোপসাগর হয়ে কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল অব্যাহত থাকবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

জান্তা বাহিনীর সঙ্গে ছয় মাস ধরে তীব্র সংঘাতের পর গত রবিবার ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নেয় আরাকান আর্মি। এরপর সামরিক প্রয়োজন ও জননিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ বিবেচনায় নিয়ে নাফ নদীর মিয়ানমার অংশে অনির্দিষ্টকালের জন্য নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।

গত ৮ ডিসেম্বর মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরও শতভাগ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর আরাকান আর্মি নাফ নদীর মিয়ানমারের অংশে অনির্দিষ্টকালের জন্য নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।

এমন প্রেক্ষাপটে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথসহ নদীটির বাংলাদেশ অংশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারিত খবর অনুয়ায়ী টেকনাফসহ বাংলাদেশ লাগোয়া পুরো সীমান্ত এলাকার নিয়ন্ত্রণ এখন মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হাতে। দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীর প্রচারিত বিবৃতিতে নাফ নদীর মিয়ানমার অংশ দিয়ে মাছ ধরার ট্রলারসহ যেকোনো ধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এতে নাফ নদীর জলসীমার শূন্যরেখার কাছাকাছি নৌযান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

“নাফ নদীর বঙ্গোপসাগরের মোহনার আগে বাংলাদেশ অংশে বেশ কয়েকটি ডুবোচর রয়েছে। এ কারণে বড় ধরনের নৌযানগুলোকে নাফ নদীর কিছুটা দূরুত্ব মিয়ানমার অংশ দিয়ে চলাচল করতে হয়। তাই সীমান্তে ঝুঁকি এড়াতে উপজেলা প্রশাসন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নাফ নদীতে সব ধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।”

তিনি বলেন, “নাফ নদীতে নৌযান চলাচল বন্ধ থাকলে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামালের সঙ্কট দেখা দিতে পারে। তাই সীমান্তে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দ্বীপে পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট থেকে পণ্যবাহী সাতটি ট্রলার কোস্টগার্ডের নিরাপত্তায় সেন্ট মার্টিন রওনা দিয়েছে। এসব ট্রলারে অন্তত ৫০ জন যাত্রীও দ্বীপে গেছেন।”

ইউএনও জানান, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ যেতে জোয়ারের সময় ছোট ও মাঝারি আকারের ট্রলারগুলোকে নাফ নদীর বাংলাদেশের জলসীমা দিয়ে অনুমতি নিয়ে চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব ট্রলার কোনও অবস্থাতেই শূন্যরেখার কাছাকাছি অথবা মিয়ানমার জলসীমায় প্রবেশ করতে পারবে না। জোয়ারের সময় যাত্রীবাহী স্পিডবোটগুলো শাহপরীর দ্বীপের গোলারচর পয়েন্ট দিয়ে সেন্ট মার্টিন যাতায়ত করতে পারবে।

সেন্ট মার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি রশিদ আহমদ বলেন, টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন রুটে ২৭টি সার্ভিস ট্রলার ও ৪৭টি স্পিডবোট রয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলা প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা জারির পর থেকে কোনও নৌযান চলাচল করেনি। তবে বৃহস্পতিবার বিকালে প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে কোস্ট গার্ডের নিরাপত্তায় পণ্যবাহী সাতটি ট্রলার সেন্ট মার্টিন রওনা হয়েছে। এসব ট্রলারে কিছু সাধারণ যাত্রীও ছিলেন।

মিয়ানমারে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে টেকনাফ সীমান্তে নিরাপত্তাসহ টহল ও নজরদারি জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়ানের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা উপ-অধিনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত