তৃতীয় বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তিনিসহ শপথ নিয়েছেন নতুন জোট সরকারের ৭২ মন্ত্রী।
নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন ছয়জন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া বিজেপির জোট এনডিএর শরিক দলগুলোর ১১ জন উঠছেন মোদীর নতুন নৌকায়।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রবিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শপথবাক্য পড়েন ৭৩ বছর বয়সী নরেন্দ্র মোদী। তাকে শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
শপথ নেওয়া ৭২ জনের মধ্যে ৩০ জন কেবিনেট মন্ত্রী, সুনির্দিষ্ট দপ্তর ছাড়া পাঁচজন এবং ৩৬ জন প্রতিমন্ত্রী।
ভারতের রাজধানী দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে হয় শপথ অনুষ্ঠান। যেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদ মুইজ্জু, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহালসহ অন্য আমন্ত্রিতরা।
এনডিটিভি বলছে, নতুন সরকার গঠনের ক্ষেত্রে মোদী ধারাবাহিকতা ও অভিজ্ঞতার সমন্বয় করেছেন। মন্ত্রিসভার প্রথমদিকেই রয়েছেন অমিত শাহ, নিতিন গাদকারি, নির্মলা সীতারমনের মতো নেতারা।
যে মন্ত্রীদের শপথ নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে তারা হলেন- বিদায়ী মন্ত্রিসভায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী লক্ষ্ণৌর সংসদ সদস্য রাজনাথ সিংহ, মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান, বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা, বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সড়ক পরিবহনমন্ত্রী মহারাষ্ট্রের নাগপুরের বিজেপির সংসদ সদস্য নিতিন গডকড়ী, আগের মন্ত্রিসভার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গুজরাটের গান্ধীনগরের বিজেপির সংসদ সদস্য অমিত শাহ, বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থমন্ত্রী রাজ্যসভার সংসদ নির্মলা সীতারমন।
এছাড়া বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বিদেশমন্ত্রী বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য এস জয়শঙ্কর, হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং কার্নাল লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী প্রবীণ বিজেপি নেতা মনোহরলাল খট্টর, জেডিএস নেতা এইচডি কুমারস্বামী, বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার ক্রেতাসুরক্ষা, খাদ্য এবং সরবরাহমন্ত্রী পীযূষ গয়াল, বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য ও বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানও শপথ নিয়েছেন।
আরও যাদের শপথ নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে তার মধ্যে রয়েছেন এনডিএর শরিক দল জেডিইউ এর রাজীবরঞ্জন সিংহ ওরফে লাল্লন, আরেক শরিক হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চার (হাম) নেতা জিতনরাম মাঝিঁ, টিডিপির নেতা কে রামমোহন নায়ডু, আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, মধ্যপ্রদেশের বিজেপির সংসদ সদস্য বীরেন্দ্র কুমার, ওড়িশার সুন্দরগড়ের বিজেপি সংসদ সদস্য জুয়েল ওরাওঁ এবং কর্নাটকের ধারওয়াড় কেন্দ্রের বিজেপি সংসদ সদস্য প্রহ্লাদ জোশী।
গত দুই মেয়াদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের পর এবার বিজেপি এককভাবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসন পায়নি।
ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার ৫৪৩ আসনের মধ্যে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় প্রয়োজন ছিল ২৭২ আসন। কিন্তু বিজেপি এবার পেয়েছে ২৪০টি। ২০১৯ সালে দলটির আসন ছিল ৩০৩টি। আর ২০১৪ সালে পেয়েছিল ২৮৩টি।
একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও বিজেপি সরকার গঠন করতে পারল। কারণ দলটির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) ২৯৩টি আসনে জিতেছে।
বিজেপিসহ এনডিএ জোটে আছে মোট ৪১টি দল। বিজেপি ছাড়া বাকী দলগুলোর মধ্যে তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ১৬, জনতা দল-ইউনাইটেড (জেডি–ইউ) ১২, একনাথ সিন্ধের শিব সেনা ৭, লোক জনশক্তি পার্টি ৫, জনসেনা পার্টি ২, রাষ্ট্রীয় লোকদল ২, জনতা দল (সেক্যুলার) ২, আপনা দল ১, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি ১, অসম গণ পরিষদ ১, সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চা ১, ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবারেল ১ ও হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (সেক্যুলার) ১টি আসন পেয়েছে।