Beta
শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৭৫ শিক্ষার্থী বহিষ্কৃত

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
[publishpress_authors_box]

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের ৭৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ছয় মাস থেকে সর্বোচ্চ দুই বছর মেয়াদে বহিষ্কৃত হওয়া এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে ইন্টার্ন করছেন এমন অনেকেও আছেন।

সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ।

এর আগে রবিবার একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ৮৬ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।

বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের কারণ হিসেবে একাডেমিক কাউন্সিল জানিয়েছে, ছাত্রাবাসে অবৈধ প্রবেশ, কক্ষ দখল, মারধর, নিষিদ্ধ থাকার পরও রাজনীতিতে যুক্ত থাকাসহ বিভিন্ন কারণে এই শাস্তির সিদ্ধান্ত।

ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতি নিষিদ্ধের খবর আসতে থাকে। ১৪ আগস্ট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি দেয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজও।

বহিষ্কারের বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা উল্লেখ না করা হলেও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শাস্তিপ্রাপ্তদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থক। তারা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

গত ২৩ অক্টোবর ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

যে ৭৫ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে তার মধ্যে ১৪ জন এমবিবিএস পাস করে ইন্টার্ন করছেন। ইন্টার্ণ শেষ হলে তারা চিকিৎসক হিসেবে স্বীকৃতি পেতেন। এখন চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হওয়া আটকে গেল।

এছাড়া দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে সাত জনকে, ১৫ জনকে দেড় বছরের জন্য, ৩৯ জনকে এক বছরের জন্য এবং ১৪ জনকে জন্য ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। আরও ১১ শিক্ষার্থীকে তাদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ সেপ্টেম্বর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই কমিটির প্রধান ছিলেন নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামান। সেখানে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অভিযোগ জমা দেন।

এক মাসের বেশি সময় ধরে তদন্ত চালায় কমিটি। আওয়ামী লীগের আমলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার পরও ক্যাম্পাসে রাজনীতি করা, ছাত্রাবাসে অবৈধ প্রবেশ, হল দখলসহ নানা অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হয়।

এই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ‘দোষী’দের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় কমিটি। সেটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রকাশের দিন থেকেই কার্যকরের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তাসলিম উদ্দীন সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “১২ সদস্যের তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী চমেক একাডেমিক কাউন্সিল এই শাস্তি অনুমোদন করেছে। যাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৪ জন ইন্টার্ন রয়েছেন। তাদের শাস্তি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই বাস্তবায়ন করবে। আর অপরাধ গুরুতর না হওয়ায় ১১ জনকে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পাওয়া শিক্ষার্থী ও ইন্টার্নরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে সকাল সন্ধ্যাকে নিশ্চিত করেছেন কয়েকজন চিকিৎসক।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী এবং নগরীর বেসরকারি একটি হাসপাতালে কর্মরত এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “দেখা যাচ্ছে যারা শাস্তি পেয়েছে তারা সবাই ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিল। শুধু ছাত্রলীগ করার কারণে যদি এই শাস্তি দেওয়া হয় তাহলে তা ঘোরতর অন্যায়।

“এর আগে এই ক্যাম্পাসে যার মার্ডার করেছে তারা পর্যন্ত পার পেয়ে গেছে। তাদেরও এত বড় শাস্তি ভোগ করতে হয়নি।”

এবার যাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে তাদের বক্তব্য নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত