ঐতিহাসিক ৭ মার্চসহ আটটি দিনকে জাতীয় দিবসের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ব্যাখ্যা একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তবে তা নিয়ে ভিন্ন বক্তব্য এসেছে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের কাছ থেকে।
যে আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটেছে, সেই আন্দোলনের নেতৃত্বদাতা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন।
অন্যদিকে সেই আন্দোলনে শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষে সক্রিয় ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, যিনি বিভিন্ন নাগরিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বুধবার ৭ মার্চসহ সাতটি দিন জাতীয় দিবসের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
সেই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যায় উপদেষ্টা নাহিদ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “যেসব জাতীয় দিবস বাতিল করা হচ্ছে, সেগুলো চাপিয়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। ফ্যাসিস্ট আচরণ ছিল সেটা। (অন্তর্বর্তী) সরকার মনে করেছে, সেগুলো গুরুত্বহীন, তাই বাতিল করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট দল হিসেবে ক্ষমতায় ছিল। মানুষের ভোটাধিকার হরণ ও গুম-খুন করে এবং গণহত্যা করে তারা ক্ষমতায় ছিল। কাজেই কারা তাকে (বঙ্গবন্ধু) জাতির পিতা বলল, তারা কোন দিবসকে জাতীয় দিবস ঘোষণা করল, নতুন বাংলাদেশে সেটার ধারাবাহিকতা থাকবে না।
“আমরা বাংলাদেশকে নতুনভাবে গঠন করতে চাচ্ছি। ফলে ইতিহাসের প্রতি আমাদের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আনতে হবে।”
বঙ্গবন্ধুকে জাতির জনক মনে করে কি না এই সরকার- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “অবশ্যই না।”
নাহিদ আরও বলেন, এবারের গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে নতুন করে দিবস আসতে পারে।
নতুন সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নানামুখী আলোচনার মধ্যে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ফেইসবুকে লিখেছেন, “৭ই মার্চ আওয়ামী লীগের দলীয় দিবস নয়, এইদিনের ঐতিহাসিক বক্তৃতাও শেখ মুজিবের ব্যক্তিগত নয়।
“সারাদেশের, সকল স্তরের মানুষের, প্রায় সব দল মত সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ অনুপ্রাণিত উদ্দীপ্ত চৈতন্যের প্রকাশই ঘটেছিল এইদিনে। মুজিবের বক্তৃতার শক্তিও তৈরি হয়েছিলো জনগণের অসাধারণ উত্থানের শক্তি থেকে।”
“প্রকৃতপক্ষে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল এই দিনেই। ৭ই মার্চ অবশ্যই আমাদের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ,” দিনটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরে লিখেছেন আনু মুহাম্মদ।
তিনি আরও বলেন, “শেখ মুজিব রাজনৈতিক চরিত্র, তার সমালোচনা-পর্যালোচনা অবশ্যই হবে কিন্তু ইতিহাস মোছার চেষ্টা চলবে না।”