Beta
মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

চট্টগ্রাম আদালতের নথির ৯ বস্তা ভাঙারির দোকানে, মিলল কতটা 

SS-ctg-court-document-060125
[publishpress_authors_box]

চট্টগ্রাম আদালত ভবনের তৃতীয়তলায় মহানগরের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) কার্যালয়ের সামনে থেকে যে দুই হাজার নথি গায়েব হয়েছিল, তার মধ্যে ৯টি বস্তা উদ্ধারের খবর দিয়েছে পুলিশ।  

পুলিশ বলছে, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে রাসেল নামের এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করে বাকলিয়ার বউবাজার এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ভোরে পাথরঘাটার একটি ভাঙারি দোকান থেকে নথির ৯টি বস্তা উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের দাবি, আদালত ভবন থেকে চুরি করে সেগুলো কেজি দরে ভাঙারি দোকানে বিক্রি করেছে রাসেল। রাসেল আদালত চত্বরে চা বিক্রি করে।

কিন্তু আদালতের নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেদ করে এত গুরুত্বপূর্ণ নথি কীভাবে গায়েব করা হলো—সেই প্রশ্ন এখনও ঘুরপাক খাচ্ছে।

এতদিন পিপি কার্যালয়ের বারান্দার বাইরে থাকার পর এখনই কেন সেগুলো ‘চুরি’ হলো এবং ভাঙারি দোকান থেকে উদ্ধার হলো, সব নথি আদৌ উদ্ধার হয়েছে কি না—এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন আইনজীবীরা।

নথি গায়ের হওয়ার খবর প্রথম পুলিশে দেন পিপি মফিজুল হক ভূঁইয়া নিজেই; সেখানে ২০০২-২০১৫ সাল পর্যন্ত সময়ের বিভিন্ন হত্যা, সন্ত্রাস, মাদক, চোরাচালান ও বিস্ফোরকসহ বিভিন্ন মামলার নথি অরক্ষিত অবস্থায় পড়েছিল বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

অবকাশকালীন সময়ে ১৩-৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আদালত ভবন থেকে ১ হাজার ৯১১টি নথি গায়েব করা হয়েছে বলে মামলার জিডিতে উল্লেখ করেছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মফিজুল হক ভুঁইয়া।

জিডি হওয়ার ৪ দিন পর বৃহস্পতিবার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ভাঙারির দোকান থেকে নথির ৯টি বস্তা উদ্ধারের কথা জানাল পুলিশ।

জিডিতে উল্লেখ করা প্রায় দুই হাজার নথির বিপরীতে কতগুলো এখনও উদ্ধার সম্ভব হয়নি, তার তথ্য জানাতে পারেনি পুলিশ। তারা বলছে, কী পরিমাণ তথ্য গায়েব হয়েছে, সেই তালিকার সঙ্গে উদ্বার করা নথি মিলিয়ে দেখার পরই জানা যাবে কী পরিমাণ বাইরে রয়ে গেছে।

আইনজীবীদের অনেকে বলছে, আসামিদের সংঘবদ্ধ চক্র শুনানি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতেই এমনটি করা হয়েছে। এটা জঘন্য কাজ। আদালতে যখন শুনানি হবে, তখন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শুনানির পক্ষে আগের রেফারেন্স আদালতে উপস্থাপন করতে গেলেই বোঝা যাবে কতটা ক্ষতি হয়েছে। আর এত মামলার নথি গায়েবের পর আদালতের নিরাপত্তা কতটা সুরক্ষিত, সেটিও প্রশ্ন।

আবার ঘটনাটি ঘটেছে আদালত ভবনের তৃতীয় তলায়; সেখানে কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো নেই।

কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুল করিম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “মহানগর পিপি কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় সিসিটিভি ছিল না। নিচ তলার সিসি ফুটেজ দেখেই আমরা রাসেলকে শনাক্ত করি। বুধবার বাকলিয়া বউ বাজার এলাকা থেকে রাসেলকে আটক করি।

“পরে তার দেওয়া তথ্যে বৃহস্পতিবার ভোরে পাথরঘাটা সতীশ বাবু লেইনের মফিজের ভাঙারির দোকানে তল্লাশি চালিয়ে এসব কেইস ডকেট উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা নথির মধ্যে সব পাওয়া গেছে কি না, তালিকা ধরে যাচাই করা ছাড়া জানা সম্ভব না।”

তিনি বলেন, রাসেল আদালত এলাকার একটি চায়ের দোকানে কাজ করে। এসব নথি পরিত্যক্ত অবস্থায় আদালতের বারান্দায় ফেলে রাখা হয়েছিল মনে করে রাসেল ২৭-২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে সন্ধ্যার সময় কয়েক দফায় এসব নথি বস্তা ভরে নিয়ে বিক্রি করে দেয়।

“মফিজের ভাঙারি দোকানে প্রতি কেজি ১৮ টাকা দরে নথিগুলো বিক্রি করে ৪৩৭ টাকা পেয়েছিল বলে রাসেল আমাদের জানিয়েছে” বলেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত