অবশেষে ক্যান্সারের কাছে হেরে গেলেন সংগীতশিল্পী হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল। কন্ঠ শিল্পীর পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন অনুষ্ঠান নির্মাতা।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার কিছু আগে নব্বই দশকের সাড়া জাগানো এই কন্ঠ শিল্পী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন তার ভাই মহিবুর রেজা রুবেল।
মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।
২০১১ সালে জুয়েলের লিভার ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর ফুসফুস এবং হাড়েও ক্যানসার সংক্রমিত হলে দেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলে। গত অক্টোবর থেকে জুয়েলকে প্যালিয়েটিভ কেয়ারে রাখা হয়েছিল, বলে জানান তার ভাই রুবেল।
সম্প্রতি ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করার পর অবস্থার অবনতি ঘটলে গত সপ্তাহের মঙ্গলবার তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়।
মঙ্গলবার গুলশানের আজাদ মসজিদে জানাযার পর বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
১৯৬৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর জন্ম নেয়া এই গায়ক, স্ত্রী ও এক কন্যাসন্তান রেখে গেছেন।
বাবার চাকরিসূত্রে দরাজ কন্ঠের অধিকারী জুয়েলের শৈশব কেটেছে দেশের নানা জায়গায়। বাবা মায়ের অনুপ্রেরণাতে সংগীত জগতে প্রবেশ করেন। গানের হাতেখড়ি হয় খুব ছোটবেলায়। যখন তিনি প্রথম শ্রেণিতে পড়তেন।
ঢাকার শিল্প এবং সংস্কৃতি জগতে জুয়েলের শুরুটা সেই ১৯৮৬ সালে। ঢাকায় এসেই জড়িয়ে পড়েন টিএসসি কেন্দ্রীক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক তৎপরতায়।
১৯৯৩ সালে জুয়েলের প্রথম স্টুডিও অ্যালবাম ‘কুয়াশা প্রহর’ প্রকাশিত হয়। পরের বছর রিলিজ পায় ‘এক বিকেলে’ যা তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যালবাম। এই অ্যালবামটি তার নামের সঙ্গেই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যায়। পরিচিতি পান ‘এক বিকেলের জুয়েল’ হিসেবে।
এরপর একে একে রিলিজ হয় ‘আমার আছে অন্ধকার’ (১৯৯৫), ‘একটা মানুষ’ (১৯৯৬), ‘দেখা হবে না’ (১৯৯৭), ‘বেশি কিছু নয়’ (১৯৯৮), ‘বেদনা শুধুই বেদনা’ (১৯৯৯), ‘ফিরতি পথে’ (২০০৩), ‘দরজা খোলা বাড়ি’ (২০০৯) এবং ‘এমন কেন হলো’ (২০১৭)।
২০১৬ সালে তার দুইটি সিঙ্গেলস অর্থাৎ একক গান ‘তাতে কি বা আসে যায়’ এবং ‘এই সবুজের ধানক্ষেত’ প্রকাশিত হয়।