Beta
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

অরাজক এক পরিস্থিতি ঢাকায়

ঢাকার আদাবর থানার সামনে গাড়িতে আগুন। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
ঢাকার আদাবর থানার সামনে গাড়িতে আগুন। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of সকাল সন্ধ্যা প্রতিবেদন

সকাল সন্ধ্যা প্রতিবেদন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর অরাজক এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে রাজধানী ঢাকায়।

জনতার বাঁধ ভাঙা উল্লাসের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ হচ্ছে। নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্বে থাকা পুলিশের বিভিন্ন থানাও আক্রান্ত হয়েছে।

সোমবার দুপুরের পরপরই শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার খবর ছড়িয়ে পরে। এরমধ্যে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ জামান জানান, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করছেন এবং অন্তর্বর্তীকালীন একটি সরকার গঠন হবে।

এরপর হাজার হাজার মানুষ শাহবাগ থেকে মিছিল নিয়ে গণভবনের দিকে যাত্রা শুরু করে। কোনও কোনও মিছিল কাঁটাবন হয়ে, কোনও কোনও মিছিল বাংলামোটর হয়ে গণভবনের দিকে যাত্রা করে।

এই জনস্রোতের সময় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ভাংচুর-লুটপাট চালানো হয়; কোথাও কোথাও ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। এই অরাজকতা থেকে বাদ যায়নি জাতীয় সংসদ ভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বাসভবন। সেখান থেকে যে যা পেয়েছে তাই নিয়ে চলে গেছে। হামলা হয় পুলিশ সদর দপ্তরে।

আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে, শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির বাসা সুধা সদনে, ধানমণ্ডিতে তার রাজনৈতিক কার্যালয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে, তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে।

ঢাকায় এই পরিস্থিতির মধ্যে সংঘাতে অন্তত ২০ জন মারা গেছে বলে ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির তথ্যের ভিত্তিতে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে।

গণভবন-প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জনতা

বিকাল ৪টার দিকে গণভবনে ঢুকতে শুরু করে হাজার হাজার মানুষ। এরপর গণভবনে চলে ব্যাপক লুটপাট।

বিকালে বিজয় সরণি মোড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘মৃত্যুঞ্জয়ী’ ভাঙচুরের চেষ্টা করে একদল লোক।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সামনে দিয়ে লুকাস মোড় যাওয়ার পথে তেজগাঁও এলেনবাড়ীর মোড়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অফিসে জাতির পিতার আরেকটা মুর‌্যালে ভাঙতে দেখা যায় কিছু লোককে।

তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে হাজারো মানুষ। তারা উল্লাস করে। একপর্যায়ে কার্যালয়ের চেয়ার, টেবিল, সোফা, কাম্পিউটার, ল্যাপটপ, বিভিন্ন ধরনের বাতি, ফুলদানিসহ যে যা পারে নিয়ে যায়।

সুধা সদনে আগুন

বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ধানমন্ডির সুধা সদনে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এর আগে সুধা সদনে ভাংচুর চালানো হয়। বাড়ি থেকে জিনিসপত্র বের করে যে যার মতো নিয়ে চলে যায়।

বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে আগুন

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় একদল লোক। এসময় তারা নানা ধরনের স্লোগান দিচ্ছিল।

প্রধান বিচারপতি বাসভবন তছনছ

বিকাল ৫টার দিকে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষ দেওয়াল টপকে ১৯ হেয়ার রোডে অবস্থিত প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ঢুকে পড়ছে। এরপর ভেতর থেকে চিৎকার, হই হুল্লোড় ও ভাঙচুরের শব্দ আসতে থাকে। এক পর্যায়ে বাসভবনের চেয়ার, টেবিল, খাট, টেবিল, বিছানা, বালিশসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র নিয়ে যায় অনেকে।

ভাঙচুর চালানোর সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনের ছাদে উল্লাস করতে দেখা যায় বেশ কয়েকজনকে। তাদের কারও কারও হাতে ছিল জাতীয় পতাকা।

এর কিছুক্ষণ আগে প্রধান বিচারপতি বাসভবন থেকে বের হয়ে যান।

আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে আগুন

তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বিকাল ৪টার দিকে। এ সময় পাশের গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডি কার্যালয়ে আগুন

ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া বিকালে। এসময় সেখানে নানা ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়।

ধানমন্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় হামলা, ভাংচুর

ধানমন্ডির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয় বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে।

দেখা যায়, ফটক ভেঙে শতশত মানুষ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় ঢুকছে। এরপর ভাঙচুর করা হয়। একপর্যায়ে বাড়ির ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়।

পুলিশ সদর দপ্তরে হামলা

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিপুল সংখ্যক মানুষ পুলিশ সদর দপ্তরের প্রধান ফটক ভেঙে ঢুকে পড়ে। পরে তারা ভাঙচুর চালায়। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তারা লাইট বন্ধ করে যে যার কক্ষে অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে অনেকে প্রাচীর টপকে বেরিয়ে যান।

একাত্তর টিভিসহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের অফিসেও ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত