ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটে ২৩বারের শিরোপা জয়ী আবাহনী লিমিটেড। ১৯৭৩-৭৪ থেকে ২০১১-১২ পর্যন্ত ১৭বার লিগ শিরোপা জিতেছে তারা। লিগটি লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়ার পর জিতেছে ছয়বার। এর মধ্যে একটি ছিল টি-টোয়েন্টির শিরোপা। আগামী মৌসুমে এই ক্লাবের দল গোছানো অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
শেখ হাসিনা সরকার পতনে আবাহনীতেও লেগেছে ধাক্কা। কারণ ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবের পরিচালকদের বেশিরভাগই এখন আড়ালে। সরকার পতনে তারাও গা ঢাকা দিয়েছেন। ফলে নতুন মৌসুমে কীভাবে দল গঠন হবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
জাতীয় ক্রিকেট দলের তরুণ ক্রিকেটারদের প্রায় সবাই খেলেন আবাহনীতে। তাদের নিয়েই গতবার শিরোপা এসেছিল ক্লাবে। এই ক্রিকেটারদের সবারই সামনের মৌসুমেও খেলার কথা ছিল আকাশি-নীল জার্সিতে। কিন্তু এখন তা হুমকির মুখে।
ক্রিকেটারদের ধরে রাখতে আগে থেকে পারিশ্রমিকের অর্থ দিয়ে দেয় আবাহনী। কিন্তু এবার তা আর পারছে না। এই অবস্থায় সামনের প্রিমিয়ার লিগের আগে অন্য দল থেকে মোটা অঙ্কের প্রস্তাব পেলে আবাহনী ছাড়তেই পারেন ক্রিকেটাররা।
সকাল সন্ধ্যার কাছে বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছেন আবাহনীর ম্যানেজার শেখ মাসুদ ইকবাল মামুন, “কোনও ক্রিকেটারের গত মৌসুমের পারিশ্রমিক বাকি নেই। সামনের মৌসুমের পারিশ্রমিক বাকি। ওটা এখন দেওয়া একটু অনিশ্চিতই। আর এসব নিয়ে বিস্তারিত আলাপও হয়নি। কারণ এখনও লিগ কী ফরম্যাটে হবে সেটাই তো ঠিক হয়নি। এতদিন একরকম চলেছে এখন যদি পুল আকারে করা হয় তাহলে তো লিগই বদলে যাবে। নতুন করে করতে হবে সব।”
ক্লাবের কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন এক্ষেত্রে নিরুপায়। বলেছেন, “দল তো ইতোমধ্যে করা ছিল, টাকা দেওয়াটা সমস্যা হবে। যদি খেলোয়াড়রা তাদের পারিশ্রমিক ঠিকমতো বুঝে না পায় তাহলে তো অবশ্যই অন্য দলের অফার থাকবে, চলে যাবে। অনেকে ৫ লাখ টাকা কম নিয়েও খেলার কথা বলেছে। কিন্তু আমি বলেছি, ‘না, তোদের এটা পেশা। আমিও বেতন পাই।’ আমার বেতন দিতে পারবে কিনা সেটাও আমি জানি না।”
এমন অবস্থায় আগামী মৌসুমে আবাহনীর দল গোছানো নিয়ে শঙ্কা বেঁধেছে। সেরা ক্রিকেটাররা চলে গেলে ব্রাদার্স ইউনিয়ন, খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সংঘ বা সিটি ক্লাবের মতো নামকাওয়াস্তে দল গড়তে হবে আবাহনীকে।
খালেদ মাহমুদ আশা, যে করেই হোক আবাহনী লিগে খেলবে, “দল ওইরকম করতে পারুক, না পারুক হয়তো-বা পেশাদার কোনও খেলোয়াড় নিতে পারুক, না পারুক আবাহনীকে মাঠে নামতে হবে। অবশ্যই খেলতে হবে, দল না করলে বিপদ হতে পারে। আবাহনীর মতো এত বড় একটা দল যারা ক্রীড়াক্ষেত্রে এত এগিয়ে তারা লিগে খেলবে না, এটা তো হবে না।”
একই আশা ম্যানেজার মামুনেরও, “আবাহনী সবচেয়ে সফল ক্লাব। এত বড় ক্লাব আটকে থাকবে না। এখন কেউ যদি আমাদের ফান্ডিং না দেয় তাহলে আমরা অন্যভাবে দল গোছানোর চেষ্টা করব। তবে আমরা আশাবাদী প্রিমিয়ার লিগ শুরুর আগেই আবাহনীর ফান্ডিংয়ের ব্যাপারটা ঠিক হয়ে যাবে।”
একই সঙ্গে আবাহনীর ট্রফি ফেরত দেওয়ার দাবি রেখেছেন মামুন। এখন পর্যন্ত মাত্র ৮-১০ ট্রফি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ক্লাবটির ম্যানেজার।
আগামী বছর মার্চে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ হওয়ার কথা আছে।