Beta
সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫

৫৭ বছরে এসএসসি পাস করলেন ট্রাফিক পুলিশ

samad-police
[publishpress_authors_box]

বগুড়ায় ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল আব্দুস সামাদ ৫৭ বছর বয়সে এসএসসি পাস করেছেন। কারিগরি শাখা থেকে জিপিএ ৪. ২৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।

রবিবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর পুলিশ সদস্য আব্দুস ছামাদের এই সাফল্যের খবর ছড়িয়ে পড়ে।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আশরাফপুর গ্রামের আব্দুস ছামাদ বগুড়া সদর ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত। তার চাকরির মেয়াদ শেষ দিকে। দুই মাস পরই তার অবসরে যাওয়ার কথা।

দুই বছর আগে নাটোরের লালপুরের মোহরকয়া নতুনপাড়া মাধ্যমিক কারিগরি ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন আব্দুস ছামাদ। এরপর ২০২৪ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তিনি পাস করেন।

মাত্র দুই মাস আগে বগুড়ার কর্মস্থলে যোগ দেন আব্দুস ছামাদ। এর আগে কাজ করতেন পাবনার ঈশ্বরদীর ট্রাফিক বিভাগে। সকাল সন্ধ্যাকে আব্দুস ছামাদ জানান, ঈশ্বরদী থেকে কাছে হওয়ায় নাটোরের লালপুরের একটি ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন তিনি। ওই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাস করেন। তবে পরীক্ষার রেজাল্টের আগেই বদলি হয়ে যান বগুড়ায়।

৩৭ বছর আগে পুলিশে কর্মজীবন শুরু করেন ছামাদ। তখন তার এসএসসি পরীক্ষা সম্পন্ন করা ছিল না। সেভাবেই চলছিল চাকরি। অবসরে গেলে তিনি কিছু করতে চান, তাই নতুন করে মনোযোগ পড়াশোনায়। এরপর এইচএসসি সম্পন্ন করে তার ইচ্ছা হোমিও চিকিৎসা নিয়ে পড়ার।

আব্দুস ছামাদ বলেন, “অবসরের জীবনটা এমনি এমনি কাটাতে চাই না। আমার অনেক দিনের ইচ্ছা হোমিও চিকিৎসা নিয়ে পড়াশোনা করার। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই এসএসসি দিয়েছি। বগুড়ার হোমিও কলেজ থেকে পড়ালেখা করতে চাই।”

এই বয়সে এসে তার পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ও পড়াশোনা শেষ করার বিষয়টি জেনেছেন তার কর্মস্থলের সবাই। এজন্য সবার প্রশংসাও কুড়াচ্ছেন তিনি।

বগুড়া সদর ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মাহবুবুল ইসলাম খান বলেন, “চাকরি জীবনের প্রায় শেষ সময়ে এসে এসএসসি পাস করায় বোঝা যায় শিক্ষার প্রতি তার আগ্রহ, অনুরাগ রয়েছে। বিষয়টি সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।”

স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সংসার আব্দুস ছামাদের। বড় ছেলে ঢাকায় থাকেন। বিবিএ পড়া অবস্থায় মেয়ের বিয়ে হয়। আর ছোট ছেলে বর্তমানে ডিপ্লোমা করছেন।

মাহবুবুল ইসলাম আরও বলেন, “তার ভেতরে শিক্ষার স্বপ্ন আকাঙ্ক্ষা যে এতদিনেও রয়ে গিয়েছিল, তা সত্যিই অনুপ্রেরণার। আব্দুস সামাদের এই বয়সে এসে পড়াশোনার বিষয়টি ছোট বড় সবার জন্য অনুকরণীয়। সবাই উপলব্ধি করুক, শিক্ষা গ্রহণের কোনও বয়স নেই।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত