যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার খাঁড়া এখনও ঝুলছে র্যাবের ওপর; রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এই বাহিনীকে বিলুপ্ত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
এটাই প্রথম নয়, সন্ত্রাস দমনে গঠিত বাংলাদেশের বিশেষ বাহিনী র্যাবের সমালোচনা দুই দশক আগে গঠনের পর থেকে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য বিভিন্ন সময়ে এই বাহিনী বিলুপ্তের দাবি উঠেছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর পক্ষ থেকে। তবে কোনও সরকারই তা আমলে নেয়নি।
পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশের মানবাধিকারকর্মীরাও চান, এখন র্যাবকে বিলুপ্ত করা দরকার। র্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমন হোসেনও চান, ভেঙে দেওয়া হোক এই বাহিনী।
যেভাবে গঠিত হয় র্যাব
পুলিশের একটি ইউনিট হিসাবে র্যাব গঠন করা হয় ২০০৪ সালের ২৬ মার্চ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে।
২০০১ সালে ওই সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর সন্ত্রাস দমনে প্রথমে সেনাবাহিনীকে দিয়ে ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’ পরিচালনা করা হয়েছিল। সেই অভিযানে অনেক মৃত্যু ব্যাপক সমালোচনা তৈরি করেছিল।
এরপর ২০০৩ সালে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে বাদ দিয়ে পুলিশের মধ্যে একটি ইউনিট গঠন করা হয়, নাম দেওয়া হয় ‘র্যাপিড অ্যাকশন টিম- র্যাট’। কিন্তু এর নামের সংক্ষিপ্ত রূপ র্যাট বা ইঁদুর নিয়ে হাস্যরস হলে সরকার পরিকল্পনা বদলায়।
এরপর গঠন করা হয় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব। এটি পুলিশের অধীন হলেও প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদেরও এতে যুক্ত করা হয়। বাহিনীর প্রধান হিসাবে প্রথমে দায়িত্ব নেন আনোয়ারুল ইকবাল, যিনি পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হয়েছিলেন।
পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, আনসার, কোস্টগার্ড সদস্যরা র্যাবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে বাহিনীর প্রধান হন অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক পদমর্যাদার কোনও কর্মকর্তা, তার পরের স্থানে দায়িত্ব পালন করেন সেনাবাহিনী থেকে আসা কোনও কর্মকর্তা।
র্যাব গঠনের পর থেকে ‘ক্রসফায়ার’ শব্দটি পরিচিত হয়ে ওঠে। নানা অভিযানে সন্দেহভাজন অপরাধীর মৃত্যুর খবর র্যাব পরিবেশিত করত এভাবে- অভিযানে গেলে ওঁৎ পেতে থাকা অপরাধীরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। দুই পক্ষের বন্দুকযুদ্ধের পর অপরাধীরা পালিয়ে গেলে একজনের লাশ পাওয়া যায়।
প্রায় সবগুলো ঘটনার একই বিবরণ নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছিল কিছুদিন পরই; এমন অনেক ঘটনার ক্ষেত্রে দেখা গেছে, র্যাব সদস্যরা গুলি চালিয়ে হত্যার পর তাকে ক্রসফায়ার বলেছিল।
আবার নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের মতো পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়ও র্যাব কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততা বেরিয়ে আসে।
২০২২ সালে সেন্টার ফর গভর্ন্যাস স্টাডিজ (সিজিএস) জানায়, ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনাগুলোয় র্যাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। ৭১টি গুমের ঘটনার মধ্যে ২১টি অভিযোগ ছিল র্যাবের বিরুদ্ধে, যা শতকরা হারে ৪০ দশমিক ৩৮।
র্যাবের নির্যাতন : লিমন থেকে একরামুল
র্যাবের ক্রসফায়ার বড় প্রশ্নের মুখে পড়ে ২০১১ সােলর ২৩ মার্চ ১৬ বছরের কলেজছাত্র লিমন হোসেনকে গুলি করার পর।
র্যাব-৮ এর এক অভিযানে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন লিমন। হাসপাতালে ভর্তির চার দিন পর লিমনের বাম পা কেটে ফেলতে হয়। বর্তমানে তিনি কৃত্রিম পা নিয়ে চলাফেরা করছেন।
তখন লিমনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছিল র্যাব। লিমন ঝালকাঠির রাজাপুর থানা মামলা করতে গেলে তা নেওয়া হয়নি। পরে তিনি আদালতে গেলে মামলা নেওয়া হয়। তবে তদন্তের পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। বলা হয়, দুই পক্ষের গোলাগুলির মধ্যে কে কাকে গুলি করেছে, সেটা জানা যায়নি।
লিমন বর্তমানে ঢাকার সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রভাষক। তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, বর্তমানে মামলাটি সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট) রয়েছে। তিনি এর বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছেন।
“আমি প্রধান উপদেষ্টা বরাবর আবেদন করব, অনুলিপি দেব স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়কে। ড্রাফট করা শেষ, আগামী সপ্তাহেই এটা করবো আমি।”
কীসের আবেদন করবেন- প্রশ্নে লিমন বলেন, “আমি চাই আমার সঙ্গে ঘটা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত। আমার প্রতি কারও সহানুভূতি দরকার নেই। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক, যারা দোষী, তাদের শাস্তি নিশ্চিত হোক।”
র্যাবকে নিয়ে তিনি বলেন, “র্যাব এক সন্ত্রাসী সংগঠন। এর কোনও সুনাম দেশের কোথাও নাই। র্যাব বিলুপ্তির কথা আমি জীবনে বহুবার বলেছি।
“শুধু আমি কেন, র্যাব চট্টগ্রামের (কক্সবাজারের) একরামুল হককে মেরে ফেলেছে, নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের আসামি তারা। মানুষ ভয়ে থাকে র্যাবের নামে। তাহলে একটা সন্ত্রাসী সংগঠন দেশে কেন থাকবে?”
ড. ইউনূসের নেতৃত্বে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে, তাদের অনেকের এর আগে র্যাবের বিরুদ্ধে অবস্থানের বিষয়টি তুলে ধরে লিমন বলেন, “তাদের কাছে আবেদন থাকবে, র্যাব বিলুপ্ত করেন, এবার সময় এসেছে।”
২০১৮ সালের ২৬ মে কক্সবাজারে মাদকবিরোধী অভিযানে র্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা একরামুল হক।
র্যাব তখন ঘটনার যে বিবরণ দিয়েছিল, তা প্রশ্নের মুখে পড়ে যায় ঘটনার ঠিক আগে মেয়ের সঙ্গে তার কথোপকথন এবং ঘটনার সময় তার ফোন থেকে স্ত্রীর কাছে আসা কলের কারণে।
একরামের মেয়ের বলা বাবার সঙ্গে শেষ কথা ‘আব্বু তুমি কান্না করতেছো যে’ তখন ক্ষোভ প্রকাশের প্রতীক হয়ে উঠেছিল সোশাল মিডিয়ায়, অনেকে এই বাক্যটি লিখে ফেইসবুকে প্রোফাইল পিকচারও দিয়েছিল।
একরামের ফোনে কল করে যাচ্ছিলেন তার স্ত্রী, মৃত্যুর আগে সেই কল কোনোভাবে রিসিভ হয়ে গেলে গুলির শব্দ, চেঁচামেচি, আর্তনাদ শোনা যাচ্ছিল।
একরামের মৃত্যুর পাঁচ দিন পর তার স্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে সেই অডিও রেকর্ড প্রকাশ করলে ব্যাপক শোরগোল ওঠে, ঘটনার তদন্তে বিভিন্ন কমিটিও হয়। কিন্তু সেই তদন্তের আর হদিস মেলেনি।
তার আগে ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করে হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
সেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় র্যাব-১১ এর তৎকালীন অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, দুই ক্যাম্প কমান্ডার আরিফ হোসেন ও এম এম রানাসহ বাহিনীর ২৫ সদস্যকে সাজা দেয়। তাদের মধ্যে ১৬ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং নয় সদস্যের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে র্যাবকে সহায়তা দিয়ে এলেও বিস্তর অভিযোগের পর গুরুতর মানবাধিকার লংঘনে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২১ সালে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটির অর্থ দপ্তরের সেই নিষেধাজ্ঞা র্যাবের সঙ্গে বাহিনীর সাবেক-বর্তমান (ওই সময়কার) সাতজন কর্মকর্তার ওপরও আসে। তারা হলেন- বাহিনীর সাবেক প্রধান বেনজীর আহমেদ, তৎকালীন প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, তৎকালীন অতিরিক্ত মহাপরিচালক খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক তোফায়েল মুস্তাফা সরওয়ার, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ আনোয়ার লতিফ খান ও র্যাব-৭ এর সাবেক কর্মকর্তা মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী।
নিষেধাজ্ঞা আরোপের সময় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তর বলেছিল, র্যাব এবং অন্যান্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ২০০৯ সাল থেকে প্রায় ৬০০টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ৬০০’রও বেশি লোকের অদৃশ্য হয়ে যাওয়া, এবং নির্যাতনের জন্য দায়ী।
সেই নিষেধাজ্ঞা তুলতে আওয়ামী লীগ সরকার বার বার আহ্বান জানালেও তাতে কাজ হয়নি।
ড. ইউনূসকে চিঠি
আওয়ামী লীগের গত দেড় দশকের শাসনকালে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বহু অভিযোগ ছিল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সেই সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে গত ২৬ আগস্ট হিউম্যান রাইটস ওয়াচ প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন, যা তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
সেই চিঠিতে র্যাবকে বিলুপ্ত করার দাবি জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশে সম্প্রতি সংঘটিত হওয়া গুরুতর নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্ত ও জবাবদিহির একটি স্বাধীন প্রক্রিয়া থাকার ওপর জোর দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বিগত সরকারের সময় র্যাব গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ছিল এবং এসব ঘটনার ক্ষেত্রে তাদের দায়মুক্তি ছিল।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ র্যাব বিলুপ্তির জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের কাছেও বিভিন্ন সময়ে দাবি জানিয়েছিল।
২০০৯ সালে র্যাব ও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর-ডিজিএফআই বিলুপ্ত করার পরামর্শ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি।
এরপর ২০১৪ সালেও র্যাবকে ‘ডেথ স্কোয়াড’ আখ্যায়িত করে এটি ভেঙে দিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছিলেন এইচআরডাব্লিউ’র এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস। সেই চিঠিতে ১০ বছরে প্রায় ৮০০ হত্যাকাণ্ডের জন্য র্যাবকে দায়ী করা হয়েছিল।
এরপর ২০১৭ সালে নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের পরও র্যাব বিলুপ্তির দাবি জানিয়ে এইচআরডব্লিউ বলেছিল, জবাবদিহির অভাবে এই বাহিনী ‘দুর্বৃত্ত’ বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।
দেশের অধিকারকর্মীরাও বিলুপ্তির পক্ষে
র্যাবের সমালোচনা সব সময়ই করে আসছেন দেশের মানবাধিকারকর্মীরা। এটি এখন বিলুপ্ত করা উচিৎ বলে মনে করেন তারা।
র্যাব বিলুপ্তির দাবি প্রসঙ্গে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “অবশ্যই দরকার, এই দাবি আমাদের এখনও রয়েছে, না থাকার কোনও কারণ নেই।
“আমরা এ নিয়ে আগেও সোচ্চার ছিলাম, এখনও রয়েছি। দাবি থাকছেই আমাদের, কারণ র্যাব দেশের মধ্যে একটা ভীতিকর অবস্থা তৈরি করেছে।”
এই মানবাধিকার কর্মী মনে করেন, পুলিশকে ঢেলে সাজিয়ে দক্ষতা বাড়ালে র্যাবের মতো এলিট ফোর্সের কোনও প্রয়োজন নেই।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান্না পান্নাও সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, র্যাব যত দ্রুত সম্ভব বিলুপ্ত করা উচিৎ।
“এই দাবি না চাওয়ার বিন্দুমাত্র কারণ নেই। কারণ, র্যাব যে কাজ করে, সেটা পুলিশই করতে পারে।”
২০০৪ সালে র্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর বিরোধিতা করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “এটা তো (র্যাব) রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসী সংগঠন। র্যাবের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্যই মানুষ বিচার বিভাগের উপর আস্থা হারিয়েছে।
“এবং সেইসঙ্গে জিজ্ঞেস করতে চাই, র্যাবকে এই কিলিং এর ক্ষমতা কে দিয়েছে? এই উত্তরটা জানা খুব দরকার। আর এজন্য বিচারের সম্মুক্ষীন করা খুব উচিৎ বলে মনে করি।”
সরকার কী করবে
র্যাবের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে, তার দায় বাহিনীর নয়, সরকারের বলে মনে করেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নূর মোহাম্মদ।
তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “সরকার যেভাবে র্যাবকে পরিচালিত করেছে বা করবে, সেভাবেই চলবে বা চলেছে।”
চাকরি ছাড়ার পর এক মেয়াদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নুর মোহাম্মদ বলেন, “কেবল বিগত সরকার কেন, এর আগেও সবাই কম-বেশি ব্যবহার করেছে (র্যাবকে)। অপরাধ দমন-নিয়ন্ত্রণ, বিরোধীদল দমন-অন্যায়-বেআইনিভাবে র্যাবকে ব্যবহার করেছে।
“শুধু র্যাব কেন, ডিজিএফআই (প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা), এনএসআইসহ (জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা) সবাইকেই ব্যবহার করা হয়েছে। শেখ হাসিনার সরকার এদের নষ্ট করেছে।”
২০০৭-০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে পুলিশ প্রধানের দায়িত্বে থাকা নুর মোহাম্মদ মনে করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলোতে সংস্কার আনার সুযোগ রয়েছে।
“এখন যে বলা হচ্ছে, পুলিশ কমিশন করা হবে, সংস্কার করা হবে, এটা দ্রুত করা দরকার। যা যা করলে এসব বাহিনীর পেশাদারিত্ব বজায় থাকবে, যা করলে এরা নিউট্রাল, ইমপার্শিয়ালভাবে কাজ করবে, সেটাই করা দরকার।”
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের চিঠির পর র্যাবকে নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত জানতে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের মোবাইলে সকাল সন্ধ্যার পক্ষ থেকে কল করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
আইন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তাকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সকাল সন্ধ্যার ফোন ধরার পর প্রশ্ন শুনে বলেন, “এটা নিয়ে আপনি আমার অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।”
এটুকু বলার পরই কলটি কেটে দেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মোমেন এবিষয়ে কোনও কথা বলতে রাজি হননি।
অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেসুর রহমান সরকারকে ফোন দিলে তিনি মন্ত্রণালয়ের আরেক অতিরিক্ত সচিব এ কে এম টিপু সুলতানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
টিপু সুলতানকে ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।