আর্থিক জালিয়াতিতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে দুই বছর নিষিদ্ধ করেছিল ফিফা। সেই শাস্তির এক বছরও পূর্ণ হয়েছে এপ্রিলে (২০২০ সাল পর্যন্ত অপরাধের জন্য)। এবার ধরা পড়েছে ২০২২ সালের আর্থিক জালিয়াতি। আগের মত এবারও বাফুফের কেনাকাটায় জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে ফিফা।
তাই সব ধরনের ফুটবল থেকে সোহাগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তিন বছর। অর্থাৎ আজ থেকেই তার তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা শুরু হল। সে সঙ্গে ২০ হাজার সুইস ফ্রাঁ (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৬ লাখ টাকা) জরিমানা করা হয়েছে।
কার কি শাস্তি
- বাফুফের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ফাইন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদীর ১০ হাজার সুইস ফ্রাঁ (প্রায় ১৩ লাখ টাকা) জরিমানা।
- বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ সব ধরনের ফুটবল থেকে তিন বছর নিষিদ্ধ সঙ্গে জরিমানা ২০ হাজার সুইস ফ্রাঁ।
- বাফুফের সাবেক চিফ ফাইন্যান্স অফিসার ও সাবেক অপারেশনস ম্যানেজার মিজানুর রহমান ২ বছর নিষিদ্ধ, জরিমানা ১০ হাজার সুইস ফ্রাঁ।
- বাফুফের প্রকিউরমেন্ট ও স্টোর অফিসার হাসান শরীফকে সতর্ক করা হয়েছে আর ফিফার কমপ্লায়েন্স ট্রেনিং নিতে বলা হয়েছে।
ফিফার স্বাধীন নৈতিকতা বিষয়ক কমিটির অ্যাজুডিকেটরি চেম্বারের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে বাফুফের ৫ জনের নানা মেয়াদের শাস্তি ও জরিমানার পরিমাণ। তাতে ১০ হাজার সুইস ফ্রাঁ জরিমানা করা হয়েছে বাফুফের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ফাইন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদীর।
বাফুফের অর্থ কমিটির প্রধান হিসেবে ফিফা প্রদত্ত অর্থের অনিয়মের কারণে এই জরিমানা সালাম মুর্শেদীর। ক্রয় ও পরিশোধের প্রক্রিয়াগুলোতে মিথ্যা তথ্য, ত্রুটিপূর্ণ ক্রয় আদেশ ও ভুল দলিল পরিবেশনের জন্যই পেয়েছেন এমন শাস্তি।
আবু নাঈম সোহাগ, আবু হোসেন ও মিজানুর রহমানের শাস্তি হয়েছে অনুচ্ছেদ ১৪ (সাধারণ কর্তব্য), অনুচ্ছেদ ১৬ (আনুগত্যের দায়িত্ব) এবং অনুচ্ছেদ ২৫ (জালিয়াতি ও প্রতারণা) অনুসারে।
আর আবদুস সালাম মুর্শেদী ও ইমরুল হাসানের শাস্তি হয়ে অনুচ্ছেদ ১৪ ধারা অনুসারে।
এই শাস্তি দেওয়ার আগে ফিফার স্বাধীন ইথিকস কমিটি বিচারিক চেম্বার অধিকতর তদন্ত ও শুনানি কার্যক্রম চালিয়েছে।
জালিয়াতির মধ্যে অন্যতম জুম মিটিংয়ের সরঞ্জাম ও জিমের উপকরণ কেনায় দূর্নীতি।
ফিফার তদন্তে ধরা পড়েছে ২০২২ সালে জুম মিটিংয়ের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া সরঞ্জাম কেনা। সেই বছরের ৫ জুলাই প্রকিউরমেন্ট ও স্টোর অফিসার ইমরুল হাসান শরীফ কোটেশন চান অনুমোদন না নেওয়া সরঞ্জামের।
এছাড়া ২০২২ সালের ৩ অক্টোবর জিমের জন্য ১০০ ফোম রোলার্স, ১০০ ইলাস্টিক ব্যান্ড, ১০০ ম্যাটসসহ আর কিছু উপকরণের দরপত্রের জন্য পাঠানো হয় কয়েকটি কোম্পানিতে। তাদের মধ্যে ‘ফিটনেস ইনসাইড’ ও ‘মাল্টি ট্রেড’ এর জবাব ছিল হুবহু একই রকম শব্দে লেখা! সেই সন্দেহ থেকেই অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে জালিয়াতির খবর।