দেশের গণ্ডি পেরিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাতা আবু শাহেদ ইমন চলেছেন জাপানের চলচ্চিত্র অঙ্গন। সম্প্রতি তিনি নির্মাণ করেছেন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘টেনেমেন্ট অফ সিক্রেট টক’।
জাপানের কিয়োটো হিস্টোরিকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের অধীনে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় ‘কিয়োটো ফিল্মমেকারস ল্যাব’।
তরুণ নির্মাতাদের চলচ্চিত্র নির্মাণ ও প্রশিক্ষণের অনন্য এই মঞ্চ ইতিমধ্যেই বিশ্বকে এনে দিয়েছে অসাধারণ ও ঐতিহাসিক সব চলচ্চিত্র।
চলতিবছর এ ল্যাবের অধীনেই নির্মিত হয়েছে ইমনের ‘টেনেমেন্ট অফ সিক্রেট টক’।
বাংলাদেশের প্রথম নির্মাতা হিসেবে ইমন আন্তর্জাতিক এই প্লাটফর্মের অধীনে চলচ্চিত্র নির্মাণ করে দেশের জন্য বয়ে আনলেন সম্মান।
ইমনের শর্টফিল্মটি এরই মধ্যে জাপানের বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র উৎসবে নির্বাচিত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত হোক্কাইডো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ও তাচিকাওয়া মেইগাজা স্ট্রিট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে।
এই মাসে ফিল্মটি প্রদর্শিত হয় জাপানের আর্ট সেন্টারে জাপান ভিজুয়াল গ্র্যান্ড প্রি-এ। এছাড়া জাপানের নাসু কমিশনের আয়োজনে ৯ থেকে ১৭ নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য নাসু শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২৪ ছবিটি প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে।
ইমন জানান, শোচিকু স্টুডিও-এর অংশ হিসেবে তাদের নির্দেশনায় নির্মিত চলচ্চিত্রটি একটি ঐতিহ্যবাহী জাপানি ‘জিদাইগেকি’ স্টাইলে তৈরি করা হয়েছে। যেখানে কিয়োটোর শোচিকু স্টুডিওর খোলা সেট, আসল কস্টিউম, এবং ঐতিহাসিক প্রপস ব্যবহার করা হয়েছে।
শর্টফিল্মটি জাপানের প্রাচীন চলচ্চিত্র নির্মাণ ধারা ও তার নিজস্ব নির্মাণশৈলীর সমন্বয় যা আন্তর্জাতিক নির্মাতাদের একটি মেধাবী দলের সহযোগিতায় আরও সমৃদ্ধ হয়েছে, বলে জানান তিনি।
নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে আবু শাহেদ ইমন বলেন, “শোচিকু স্টুডিওতে আন্তর্জাতিক কলাকুশলী-র সাথে ‘টেনেমেন্ট অফ সিক্রেট টক’ তৈরি করতে পারা ছিল এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। আমি কৃতজ্ঞ যে এই চলচ্চিত্রটি জাপানের দর্শকদের কাছে পৌঁছাচ্ছে এবং কিয়োটো ফিল্মমেকারস ল্যাবের পরামর্শকদের সহযোগিতা ও দিক নির্দেশনার জন্য কৃতজ্ঞ।”
ইমনের প্রথম চলচ্চিত্র ‘জালালের গল্প’ বিশ্বের অসংখ্য সম্মানজনক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ ও পুরস্কার অর্জন করেছে। নির্মাণ করেছেন ওয়েব সিরিজ মারকিউলিস। প্রযোজনা করেছেন ‘ইতি তোমারই ঢাকা’, ‘পাতালঘর’ এবং ‘পায়ের তলে মাটি নাই’।
এর মধ্যে ‘জালালের গল্প’ ২০১৬ সালে, ‘ইতি, তোমারই ঢাকা’, ২০২০ সালে এবং ‘পায়ের তলে মাটি নাই’ ২০২৩ সালে অস্কারে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিল।
কিয়োটো ফিল্মমেকারস ল্যাব উদীয়মান চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জন্য একটি প্লাটফর্ম, যেখানে জাপানের ঐতিহ্যবাহী জিদাইগেকি শৈলীর চলচ্চিত্র নির্মাণ শেখানো হয়। ল্যাবের অংশীদার শোচিকু স্টুডিও, যা ২০ শতকের শুরু থেকে জাপানি চলচ্চিত্রের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে।