শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীকে অসহযোগিতা করায় অধ্যাপক ড. জুনায়েদ হালিমকে বিভাগীয় চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে সিদ্ধান্তের কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।
এর আগে বুধবার ঢাকার মিন্টু রোডে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে অভিযোগকারী ছাত্রী ও অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। ডিবির জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রভাষক আবু শাহেদ ইমন ও অধ্যাপক ড. জুনায়েদ হালিম। এসময় শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ‘কাল্পনিক’ বলে মন্তব্য করেন আবু শাহেদ ইমন।
তিনি বলেন, “২০১৯ সালে ঘটনা ঘটেছিল উল্লেখ করে ২০২২ সালে এসে কাল্পনিক একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদনের ঘটনায় উচ্চ আদালতে যাওয়া ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার বিষয়ে ডিবি আমাদের ডেকেছে। এ বিষয়ে তারা যা জানতে চেয়েছে, আমরা তথ্য দিয়েছি।”
আর ভাইবা পরীক্ষায় শিক্ষার্থীকে শূন্য দেওয়ার বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিম দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার একটি নিয়ম আছে। পরীক্ষকরা গোপন একটি খামে সিলগালা করে নম্বরপত্র পাঠান। ওই শিক্ষার্থী ঠিকমতো ক্লাসে আসত না। দ্বিতীয় সেমিস্টারের একটি কোর্সে অ্যাসাইনমন্ট ও উপস্থিতি মিলিয়ে ৪০ নম্বর থাকে। সে এর কোনও কার্যক্রমে যোগ দেয়নি, ফলে সে শূন্য পেয়েছে। সপ্তম সেমিস্টারেও চারটি অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেয়নি। ফলে সব মিলিয়ে ২৩ পায়। যেহেতু ৪০ নম্বরে পাস, তাই রেজাল্ট শিটে শূন্য এসেছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মিম যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তোলেন তার কোর্স শিক্ষক আবু শাহেদ ইমনের বিরুদ্ধে। বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুনায়েদ আহমদ হালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, ফেল করিয়ে দিয়েছেন তিনি। মিম এই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের শরণাপন্ন হন। ১৮ মার্চ মিম গোয়েন্দা কার্যালয়ে গিয়ে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ জমা দেন। তারপর তাদের মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ১৯ মার্চ মিম এসব অভিযোগে লিখিত আবেদন জমা দেন বঙ্গভবনে।