Beta
রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫
Beta
রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫

শেখ হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে ৩০ কোটি ডলার পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকে

দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়।
ঢাকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ওঠা ৩০০ মিলিয়ন ডলার (৩০ হাজার কোটি টাকা) বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রবিবার কমিশন থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এদিন দুদক প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এই অনুসন্ধানের বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, “একটি প্রশ্ন রেখেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচার নিয়ে অনুসন্ধান পর্যায়ে কিছু বলবো কিনা।

“এটি অনুসন্ধান পর্যায়ে আছে, অনেক ঘটনাই সত্য। সুনির্দিষ্টভাবে আমাদের হাতে আরও তথ্য-উপাত্ত এলে পরে আপনাদের সঙ্গে সরাসরি এ বিষয়ে কথা বলব।”

এর আগে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা পরিবারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের একটি অনুসন্ধান দল গঠন করে দুদক। একই দলকে নতুন করে আসা ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগটি অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

অভিযোগের বিষয়ে দুদক থেকে জানা যায়, আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিষয়ে একটি প্রাথমিক তদন্ত করে। ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র বনাম রিজভী আহমেদ মামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম প্রথম নজরে আসে।

এফবিআইয়ের তদন্তে সজীব ওয়াজেদ জয়ের গুরুতর আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়টি উন্মোচিত হয়। বিশেষ করে, তার নামে থাকা হংকং এবং কেম্যান আইল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব থেকে স্থানীয় একটি মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে ওয়াশিংটন ডিসি, নিউ ইয়র্ক এবং লন্ডনের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে অর্থ পাচারের তথ্য উঠে আসে।

এফবিআই তাদের লন্ডনের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এবং প্রমাণ পেয়েছে যে সেখানে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম এবং মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের (ডিওজে) সিনিয়র ট্রায়াল অ্যাটর্নি লিন্ডা সেমুয়েলস স্পেশাল এজেন্ট লা প্রিভোটের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে জমা করা হয়েছে।

এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর পাঁচ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলারের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পসহ অন্যান্য প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।

এতে শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকসহ পরিবারের অন্যান্যদের বিরুদ্ধে সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগে রূপপুর ছাড়াও আশ্রয়ণসহ আটটি প্রকল্পে দুর্নীতির তথ্য আমলে নেওয়া হয়েছে। অন্যান্য প্রকল্পগুলোতে ২১ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের নেতৃত্ব পাঁচ সদস্যের একটি দল এ অনুসন্ধান করছে। দলের অন্য সদস্যরা হলেন, উপ-পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান ও তিন সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া, এসএম রাশেদুল হাসান ও একেএম মর্তুজা আলী সাগর।

গত ১৫ ডিসেম্বর হাসিনা পরিবারের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) লোপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

গত ৩ সেপ্টেম্বর এ অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাই কোর্টে রিট করেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ।

এর আগে ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর ১৯ আগস্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শেখ হাসিনা পরিবারের দুর্নীতি করেছে বলে কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে হাই কোর্টে রিট করা হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত