দেশের বিভিন্ন স্থানে যখন সংসদ সদস্যের ছেলেরা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হচ্ছেন, তখন বগুড়ার আদমদীঘিতে দেখা গেল উল্টো চিত্র।
এই উপজেলায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য খান মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মেহেদী বাঁধনের বাবা সিরাজুল ইসলাম খান রাজু।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাজু আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হন। গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সেই নির্বাচনে বিজয়ীও হন তিনি।
ভোটে ফলে দেখা যায়, রাজু আনারস প্রতীকে ৩৯ হাজার ৮৩২ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাবেক উপজেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম রাজা মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৩২ হাজার ১২৮ ভোট। এই উপজেলায় ভোটের হার ছিল ৪৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
সিরাজুল ইসলাম খান রাজু দীর্ঘদিন আদমদীঘি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। ইউপি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় ২০০৮ সালে আব্দুল জলিলের হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
পরের বছর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও ২০১৪ সালে আব্দুল মহিত তালুকদারের কাছে পরাজিত হন রাজু। ২০১৮ সালে আবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফের উপজেলা চেয়ারম্যান হন।
২০২০ সালে আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে রাজু সভাপতির দায়িত্ব পান। এই কমিটিতে যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক তার বড় ছেলে মেহেদী।
এবারের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে বগুড়া-৩ (দুপচাঁচিয়া-আদমদীঘি) আসনে সংসদ সদস্য পদে দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন রাজু। উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতিও নেন। তবে আওয়ামী লীগ জোট শরিক দলকে আসনটি ছেড়ে দেওয়ায় রাজুর আর ভোট করা হয়নি।
রাজু সরে গেলেও তার ছেলে মেহেদী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এখন রাজুও ফের উপজেলা চেয়ারম্যানের পদটি নিলেন।
বিএনপি বর্জন করায় এবার ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে অংশ না নিয়ে প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দিলেও মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের স্বজনদের প্রার্থী হতে নিষেধ করে দিয়েছিল।
তবে বিভিন্ন এলাকায়ই সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষিত হচ্ছে। এরই মধ্যে অনেক সংসদ সদস্যের স্বজন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিতও হয়েছেন। তাদের সঙ্গে যোগ হল রাজুর নাম।
তবে এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, এমপির স্বজনদের প্রার্থী না হতে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি, এটা অনুরোধ রাখা হয়েছে।
আদমদীঘির বিষয়ে তিনি বলেন, সেখানে সংসদ সদস্য মেহেদী আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নন, তিনি স্বতন্ত্র বলে তার ক্ষেত্রে বিষয়টি খাটে না। আর আওয়ামী লীগের নেতা হিসাবেই রাজুর অবস্থান রয়েছে।