ভারতের আদানি গ্রুপ বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ বাংলাদেশের কাছে পাবে ৮০০ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। সেই বকেয়া পরিশোধের তাগাদা দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে তারা বলেছে, চুক্তি অনুযায়ী তারা বিদ্যুৎ সরবরাহে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শুক্রবার ভারতের সংবাদমাধ্যম মানিকন্ট্রোলের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
গত দেড় দশকে শেখ হাসিনার সরকার শতাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের লাইসেন্স দিয়েছে, চুক্তি করেছে। গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, দরকষাকষি ছাড়াই প্রতিটি চুক্তি করা হয়েছিল বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে। এজন্য প্রতিটি চুক্তিতেই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণব্যয় ও ক্যাপাসিটি চার্জ ধরা হয়েছে অনেক বেশি।
তবে আওয়ামী লীগের আমলে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হয় আদানি পাওয়ারের সঙ্গে করা চুক্তিটি নিয়ে। ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় নির্মিত আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১,৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার জন্য ২৫ বছরের চুক্তি করেছে আওয়ামী লীগ সরকার, যা করা হয় সর্বোচ্চ গোপনীয়তা অনুসরণ করে।
ভারতের বিতর্কিত শিল্পপতি গৌতম আদানির মালিকানাধীন বহুজাতিক কোম্পানি আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনারও অভিযোগ রয়েছে।
রাষ্ট্রক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিদ্যুৎ খাতের এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।
আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তিতে শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়গুলো কীভাবে সম্পাদন করা হয়েছে, তাতে কোনও ত্রুটি ছিল কি না, শুল্ক পরিহার বা প্রত্যাহারের বিষয় রয়েছে কি না; এমন আরও প্রশ্ন সামনে রেখে তদন্তে নামছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
আদানি গ্রুপের এক সূত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবার মানিকন্ট্রোলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাওনা ‘দ্রুত ছাড়’ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অনুরোধ করেছে আদানি।
আদানি গ্রুপের ওই সূত্র বলেছে, “আমরা বাংলাদেশকে বলেছি যে আদানি গ্রুপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য বিনিয়োগকারীদের চাপের মধ্যে রয়েছে। এছাড়া আদানি গ্রুপ আশা প্রকাশ করেছে, বিলম্বের সুদসহ সব বকেয়া অবিলম্বে পরিশোধ করা হবে।”
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সঙ্গে আদানি পাওয়ারের চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশকে প্রতি মাসে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আদানি গ্রুপকে ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার পাওনা দিতে হয়।
সময়মতো পাওনা পরিশোধ না করার কারণে, বাংলাদেশের কাছে আদানির বকেয়া ৮০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।