Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

অর্থসংকটে এডিপি বাড়ছে মাত্র ২ হাজার কোটি টাকা

কৃষি মন্ত্রণালয় চলতি অর্থবছরে প্রায় অর্ধেক এডিপি বাস্তবায়ন করেছে।
কৃষি মন্ত্রণালয় চলতি অর্থবছরে প্রায় অর্ধেক এডিপি বাস্তবায়ন করেছে।
Picture of বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

অর্থসংকটের কারণে আগামী অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার বড় করছে না সরকার। নতুন এডিপির আকার হবে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে (২০২৩-২৪) মূল এডিপি ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা।

গত অর্থবছরের চেয়ে নতুন এডিপিতে বরাদ্দ বাড়ছে মাত্র ২ হাজার কোটি টাকা, যা শতাংশ হিসাবে বেশি ১ শতাংশেরও কম।

আর্থিক সংকটের কারণে চলতি অর্থবছরের মূল এডিপি থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ কমানো হয়।  

মঙ্গলবার আগামী অর্থবছরের এডিপির আকার চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। আগামী ১৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় এই এডিপি অনুমোদন দেওয়া হবে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছে, অর্থসংকটের কারণে নতুন এডিপির আকার বাড়ানো হচ্ছে না।

গত কয়েক অর্থবছরের এডিপির আকার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রতি অর্থবছর এডিপির আকার ১৫ থেকে ২০ শতাংশের মতো বেড়েছে। এবারই সবচেয়ে কম বাড়ানো হচ্ছে।

নতুন এডিপিতে স্থানীয় মুদ্রায় বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এক লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা স্থানীয় উৎস থেকে দেওয়া হবে। চলতি অর্থবছরে মূল এডিপিতে এর পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকা। সেই হিসাবে স্থানীয় মুদ্রায় আগামী এডিপিতে বরাদ্দ কমানো হচ্ছে ৪ হাজার কোটি টাকা। স্থানীয় মুদ্রায় বরাদ্দ কমানোর ঘটনা এবারই প্রথম ঘটতে যাচ্ছে।

এছাড়া আগামী এডিপিতে প্রথমবারের মতো বিদেশি সহায়তা পাওয়ার লক্ষ্য ১ লাখ কোটি টাকা স্পর্শ করতে যাচ্ছে। চলতি এডিপিতে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে বরাদ্দ ছিল ৯৪ হাজার কোটি টাকা।

মঙ্গলবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বর্ধিত সভায় আগামী অর্থবছরের এডিপির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালামের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

শিক্ষা-স্বাস্থ্যে বরাদ্দ কম, রাস্তাঘাট-বিদ্যুতে বেশি

আগামী অর্থবছরের এডিপিতে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ তেমন একটা বাড়ছে না। কিন্তু পরিবহন ও যাতায়াত এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি—এই দুটি খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এমনকি সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এই দুটি খাতে এডিপির যত বরাদ্দ দেওয়ার পরিকল্পনা আছে, তার চেয়ে অনেক বেশি বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। অথচ অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার চেয়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে কম বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।

সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার খাত শিক্ষা ও স্বাস্থ্য। অথচ এই দুটি খাতেই পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না।

আগামী এডিপিতে সর্বোচ্চ প্রায় ২৭ শতাংশ বা ৭০ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় আগামী বছর এডিপির ১৭ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা ছিল এ খাতে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত পাচ্ছে ৪০ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা, যা মোট এডিপির সাড়ে ১৫ শতাংশ।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত এডিপিতে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৩১ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা বা মোট এডিপির প্রায় ১২ শতাংশ। কিন্তু অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এ খাতে মোট এডিপির সাড়ে ১৬ শতাংশ বরাদ্দের কথা বলা হয়েছিল।

অন্যদিকে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় স্বাস্থ্য খাতে মোট এডিপির ১১ শতাংশ বরাদ্দের কথা থাকলেও আগামী এডিপিতে মিলছে মাত্র ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ২০ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের এডিপিতে মোটাদাগে ১৫টি খাত ৯৬ শতাংশের বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে। পরিবহন ও যাতায়াত; বিদ্যুৎ ও জ্বালানি; শিক্ষা; স্বাস্থ্য ছাড়া অন্য খাতগুলোর মধ্যে গৃহায়ণ খাতে ২৪ হাজার ৮৩৬ কোটি টাকা; স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে ১৭ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা; পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ খাতে ১১ হাজার ৮৯ কোটি টাকা, কৃষি খাত ১৩ হাজার ২১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত