প্রায় তিন মাস পর নিজের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে আরও কয়েকজনকে যোগ করছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রবিবার সন্ধ্যায় নতুন উপদেষ্টারা বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছ থেকে শপথ নেবেন বলে জানানো হয়েছে।
এই দফায় কারা কারা উপদেষ্টা হচ্ছেন, সেই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
তবে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র দুপুরের পর সকাল সন্ধ্যাকে জানায়, প্রধান উপদেষ্টার বর্তমান বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমসহ চারজন উপদেষ্টা হিসাবে শপথ নিতে যাচ্ছেন।
সূত্রটি বলেছে, পাঁচজনকে উপদেষ্টা পরিষদে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তাদের মধ্যে একজন রাজি হননি বলে চারজন শপথ নিতে যাচ্ছেন।
চারজনের মধ্যে চলচ্চিত্রকার মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নামও রয়েছে বলে সকাল সন্ধ্যা নিশ্চিত হয়েছে। তিনি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন।
এছাড়া আকিজ বশির গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেখ বশির উদ্দিন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান শপথ নিতে ডাক পেয়েছেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর আসে।
এরপর মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ বিকালে সাংবাদিকদের জানান, এই দফায় উপদেষ্টা হিসাবে তিনজন শপথ নিতে যাচ্ছেন।
বঙ্গভবনের দরবার হলে সন্ধ্যা ৭টায় নতুন উপদেষ্টার শপথ অনুষ্ঠান হবে বলে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিন দিন পর ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়।
৮ আগস্ট শপথ নিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসসহ ১৪ জন। এরপর ১১ আগস্ট দুজন এবং ১৩ আগস্ট একজন শপথ নেন। এই তিনজনের নাম ৮ আগস্টই জানানো হয়েছিল, তবে তারা সেদিন শপথ নিতে উপস্থিত হতে পারেননি।
এরপর ১৬ আগস্ট আরও চারজন শপথ নিলে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সংখ্যা ২১ জনে গিয়ে ঠেকে। নতুন তিনজন যুক্ত হলে সংখ্যাটি ২৪ জন হবে।
বর্তমান উপদেষ্টারা হলেন- অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সাবেক সচিব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, অধিকারকর্মী আদিলুর রহমান খান, আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, সাবেক সচিব মো. তৌহিদ হোসেন, পরিবেশ আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অধিকারকর্মী শারমিন এস মুরশিদ, ফারুক–ই–আজম বীরপ্রতীক, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, সুপ্রদীপ চাকমা, ডা. বিধান রঞ্জন রায়, হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আ ফ ম খালিদ হোসেন, ফরিদা আখতার, নুরজাহান বেগম, মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বাংলাদেশের ইতিহাসে যতগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসেছে, তার মধ্যে ড. ইউনূসের সরকারের আকারই সবচেয়ে বড়।
তবে তার সরকারের বর্তমান উপদেষ্টাদের অধিকাংশের সরকার পরিচালনার কোনও অভিজ্ঞতা নেই।
এদের মধ্যে ওয়াহিদউদ্দিন তিনটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করেন। ১৯৯০, ১৯৯৬ সালের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ছিলেন তিনি।
এ এফ হাসান আরিফও এনিয়ে দুই বার উপদেষ্টা হলেন। তিনি এর আগে ২০০৭ সালের ফখরুদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন সরকারে ছিলেন।
ড. ইউনূস নিজে ১৯৯৬ সালে বিচারপতি মুহম্মদ হাবিবুর রহমানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে উপদেষ্টা ছিলেন।