Beta
বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫

আফগান মেয়েদের গাইতে উৎসাহ দেওয়া নীলা পেল শিশু শান্তি পুরস্কার

নিজের কণ্ঠকে পুঁজি করে আফগান মেয়েদের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে নেমেছিলেন নীলা ইব্রাহিমি।
নিজের কণ্ঠকে পুঁজি করে আফগান মেয়েদের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে নেমেছিলেন নীলা ইব্রাহিমি।
[publishpress_authors_box]

তালেবান ২০২১ সালের আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের আগেই দেশটির রাজধানী কাবুলে স্কুলছাত্রীদের প্রকাশ্যে গান গাওয়া ছিল বারণ। সে সময় নিজের কণ্ঠকে পুঁজি করে সেই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছিল নীলা ইব্রাহিমি নামের এক কিশোরী। তার সেই প্রচেষ্টা এতটাই সাড়া ফেলেছিল যে, কাবুলের শিক্ষা কর্তৃপক্ষ তখন নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিল।

আফগান মেয়েদের অধিকার আদায়ে সেই লড়াইয়ের স্বীকৃতি হিসেবে নীলা ইব্রাহিমি মঙ্গলবার জিতে নিয়েছে আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার।

এর আগে সুইডেনের জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ও পাকিস্তানের নারী অধিকারকর্মী মালালা ইউসুফজাই সম্মানজনক এ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। মালালা পরে শান্তিতে নোবেলও জিতেছেন।

নীলা ইব্রাহিমির বয়স এখন ১৭ বছর। তালেবান আফগানিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর ২০২২ সালে ‘থার্টি বার্ডস ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংস্থার সহায়তায় পরিবারের সঙ্গে প্রথমে পাকিস্তানে ও পরে কানাডায় চলে যায় সে। এরপর থেকে পরিবারের সঙ্গে কানাডাতেই তার বসবাস।

এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, তালেবান ক্ষমতায় আসার আগেই ‘আই অ্যাম মাই সং’ শিরোনামের একটি প্রচারাভিযানের কল্যাণে সোশাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় মুখ হয়ে ওঠে নীলা। তার সেই প্রচারাভিযানই ছিল মূলত কাবুলের স্কুলছাত্রীদের জনসম্মুখে গান গাওয়ায় নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে লড়াই।

সেই লড়াইয়ের অংশ হিসেবে নীলা নিজের গলায় একটি গান গেয়ে তা রেকর্ড করত, আর তার ভাই সেই গানের ভিডিওটি সোশাল মিডিয়ায় আপলোড করত। সেই প্রচারাভিযান এতটাই সাড়া ফেলে যে, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই কাবুলের শিক্ষা কর্তৃপক্ষ স্কুলছাত্রীদের জনসম্মুখে গান গাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।

এ বিষয়ে এক ভিডিও বার্তায় নীলা বলেন, “ওই প্রথম আমার মনে হলো– যদি আমি চাই, যদি আমি মনে করি এটাই আমার জীবনযাপনের পদ্ধতি, তাহলে আমি কথা বলতে পারি এবং তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে।”

পরিস্থিতির কারণে দেশ ছেড়ে দূর পরবাসে আবাস গড়লেও নিজ দেশের মানুষকে, বিশেষ করে অধিকারবঞ্চিত মেয়ে ও নারীদের কথা ভুলে যাননি নীলা। আর তাই কানাডায় বসেই কাজ করছেন আফগান নারীদের অধিকার নিয়ে। এর অংশ হিসেবে চালু করেছেন ‘হার স্টোরি’ নামের একটি উদ্যোগ, যা আফগান মেয়েদের উৎসাহ দেয় তাদের গল্প অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে।

গত বছর মানবাধিকার ও গণতন্ত্র বিষয়ক জেনেভা সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, “প্রতিদিনই আমি আফগানিস্তানের সেই মেয়েদের কথা ভাবি, যারা পিছিয়ে পড়েছে, যাদের কোনও আশা নেই। কানাডায় আমার জীবন নিয়ে আমিই সিদ্ধান্ত নেই এবং আমিই ঠিক করি যে, আমি আসলে কেমন মানুষ হতে চাই। কিন্তু তাদের কী হবে?”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত