ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর পদ হারিয়ে একে একে যুক্তরাজ্যে ফিরছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। প্রবাসী এসব নেতার মধ্যে রয়েছেন সদ্য সাবেক হওয়া সংসদ সদস্য, সিটি করপোরেশনের মেয়র, পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।
তবে যুক্তরাজ্যে ফিরলেও দেশের পরিস্থিতি অনুকূলে এলে আবার নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন বলে জানিয়েছেন এই নেতারা।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সপ্তাহখানেক পর আওয়ামী লীগ আমলে নির্বাচিত সব সিটি মেয়র, পৌর মেয়র ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। তার আগে সরকার পতনের পরদিন ৬ আগস্ট ভেঙে দেওয়া হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ।
বরখাস্ত হওয়াদের তালিকায় প্রায় এক ডজন নেতা রয়েছেন যুক্তরাজ্যের; যাদের অধিকাংশই যুক্তরাজ্যের নাগরিক ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
এরই মধ্যে দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে এসেছেন সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল।
এছাড়া ফিরেছেন বিশ্বনাথ পৌরসভার সাবেক মেয়র মুহিবুর রহমান, সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম কিরণ, শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাদাত মান্নান অভি ও দোয়ারা বাজার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দেওয়ান তানভীর আশরাফি।
প্রবাসী এই আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে সর্বপ্রথম ১৭ আগস্ট লন্ডনে পৌঁছান সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
এর কয়েকদিন পর ফেসবুক লাইভে এসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনায় মুখর হন তিনি। দাবি করেন, সিটি মেয়র, পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের জোর করে এক কলমের খোঁচায় বাদ দেওয়া হয়েছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক এই মেয়র ছাড়া যুক্তরাজ্যে আসা নেতাদের মধ্যে কেউই এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে আসেননি। তবে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের বাসায় গিয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করছেন প্রতিদিনই।
দেশের পরিস্থিতি অনুকূলে এলে যুক্তরাজ্যে আসা নেতারা আবার নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যাবেন বলে মন্তব্য করেন যুক্তরাজ্যের সাসেক্স আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমানুজ্জামান মহী।
তিনি বলেন, “দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মামলা ও নির্যাতন হচ্ছে। ঘরবাড়িতে থাকতে পারছেন না তারা। অনেকেই নিরাপত্তার কথা ভেবে নিরাপদ জায়গায় আছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার নেতারা নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন।”