বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির অংশ হিসেব আন্দোলনকারীরা শাহবাগে অবস্থান নিয়েছে। দুপুর একটার দিকে তারা শাহবাগে আসতে শুরু করেন।
যাত্রাবাড়ি, বনানী, রামপুরা ও মিরপুর এলাকা থেকে আন্দোলনকারীরা মিছিল করে শাহবাগের দিকে আগাচ্ছে। সেনা সদস্যরা শাহবাগ থানার সামনে অবস্থান নিয়েছে। কোথাও কোনও পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়নি।
এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দিলেও সেটি উপেক্ষা করে শাহবাগে অবস্থান নেন তারা।
এরই মধ্যে শাহবাগে অবস্থানরত কয়েক হাজার আন্দোলনকারীকে ঘিরে রেখেছে সেনাবাহিনী। এসময় আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে সেনাসদস্যদের ফুল দিতে ও এক দফা আদায়ে স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সারাদেশে চলমান কারফিউর মধ্যে জনগণকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়ে বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করেছে সেনাবাহিনী।
তবে ঢাকার বখশীবাজার, রামপুরা-বনশ্রী, বসুন্ধরাসহ অন্তত তিনটি পয়েন্টে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মেইন গেটে সংঘর্ষে তিন আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন। এভারকেয়ার হাসপাতালের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে দুপুরে তিনজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসার খবর জানিয়েছেন।
বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, আন্দোলনের সমর্থনে সাধারণ মানুষকে রাস্তায় নেমে আসার জন্য হ্যান্ডমাইকে আহ্বান জানাতে দেখা গেছে আন্দোলনকারীদের।
উত্তরায় বেলা ১১টার দিকে আন্দোলনকারীরা আশেপাশের এলাকা থেকে মূল সড়কের যেতে শুরু করে। এসময় উত্তরা আজমপুর মূল সড়কে তারকাঁটার ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তায় আটকে রাখে সেনাসদস্যরা।
প্রায় আধাঘণ্টা পাশের সড়কে বিক্ষোভ করার পর একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা মূল সড়কে উঠে আসে। এসময় কয়েকটি ফাঁকা গুলির শব্দ শোনা যায়।
এ সময় আন্দোলনকারীরা সেনা সদস্যদের ব্যারিকেড তুলে নেয়ার আহ্বান জানায়। তাদের অনেককেই হাতজোড় করে সেনাসদস্যদের সরে যাওয়ার অনুরোধ করতে দেখা যায়।
বেশ কিছুক্ষণ স্লোগান চলার পর সেনাসদস্যরা রাস্তা থেকে সরে যায়। পরে উত্তরা আজমপুর থেকে রাজলক্ষী পর্যন্ত মূল সড়কে কয়েকহাজার বিক্ষোভকারী মিছিল করতে থাকেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকেও কোনো বাধা দেয়া হয়নি।
আরও জানা যায়, সোমবার সকালে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের সামনের সড়ক সেনা সদস্যরা কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে ঘেরাও করে রেখেছিল। কিন্তু পরে আন্দোলনকারীরা তা সরিয়ে রাজলক্ষীর দিকে এগিয়ে যায়।
সেনাবাহিনীর অবস্থান দেখা গেছে সংসদভবন, রামপুরার বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন, মেট্রোরেলসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থাপনায়। এছাড়া মিরপুর রোডসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সেনা সদস্যদের টহল দিতেও দেখা গেছে।
দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে দুপুর তিনটায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। শুরুতে ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল দুপুর দুইটায়। কিন্তু পরে তা এক ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।