নির্মাণকাজ শুরুর আট বছর পর মুক্তি পেতে যাচ্ছে পরিচালক নুরুল আলম আতিকের সিনেমা পেয়ারার সুবাস। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্মিত এই সিনেমার গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন নন্দিত অভিনেতা আহমেদ রুবেল।
বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকার একটি সিনেপ্লেক্সে ছিল পেয়ারার সুবাসের বিশেষ প্রদর্শনী। সেখানে যোগ দিতে বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছিলেন আহমেদ রুবেল। কিন্তু দীর্ঘ প্রতীক্ষার এই সিনেমার প্রদর্শনী দেখা হয়নি এই অভিনেতার।
তার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি, ফুরান জীবনের সব লেনদেন।
বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে আহমেদ রুবেল (৫৫) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানান অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম।
সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেন, “আহমেদ রুবেলের কী হয়েছিল তা এখনও জানা যায়নি। তার মরদেহ স্কয়ার হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রাখা রয়েছে, সেখানেই তিনি মারা গেছেন।”
গুণী এই অভিনেতার আকস্মিক প্রয়াণে শোকাহত দেশের মানুষ। বিনোদন অঙ্গণে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
পেয়ারার সুবাস চলচ্চিত্রের প্রধান সহকারী পরিচালক শ্যামল শিশিরের সঙ্গে কথা হয় সকাল সন্ধ্যার।
তিনি জানান, বসুন্ধরা থেকে পরিচালক নুরুল আলম আতিক ও আহমেদ রুবেল সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনীতে যোগ দেওয়ার উদ্দেশে রওনা দেন। গাড়ি আহমেদ রুবেলেই চালাচ্ছিলেন।
শ্যামল শিশির বলেন,“রুবেল ভাই যখন পড়ে গেলেন তখন আতিক ভাই আমাকে কল দিলেন। প্রথমে রুবেল ভাইবে বসুন্ধরার প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে গেছে। সেখান থেকে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওখানে দেখার পর বলল যে উনি নেই।”
আহমেদ রুবেল অসুস্থ ছিলেন কিনা জানতে চাইলে সহকারী পরিচালক বলেন, “না না। উনি তো সুস্থ। গাড়ি ড্রাইভ করে এসেছেন। গত তিনচারদিন আগে আমরা এক সঙ্গে উত্তরা থেকে গাজীপুর গেলাম। মাঝেমধ্যে যেতাম। আমাদের বাসা তো ওদিকেই। যখন ফিরতাম, এক সঙ্গেই ফিরতাম।
“উনার আত্মীয়স্বজন আমেরিকায় থাকেন। এখন তারা সবাই সিদ্ধান্ত নিলে সেভাবে দাফন হবে। দেশে উনার বাবা আছেন, দুই বোন আছেন।”
সেলিম আল দীনের ঢাকা থিয়েটারের মাধ্যমে কাজ শুরু করেন আহমেদ রুবেল। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে কাজ করেছেন বহু নাটক ও চলচ্চিত্রে। তার অভিনীত প্রথম নাটক গিয়াস উদ্দীন সেলিমের স্বপ্নযাত্রা। তার অভিনীত হুমায়ূন আহমেদের নাটক পোকার গোরা মজিদ চরিত্রটি বিপুল জনপ্রিয়তা পায়।
এছাড়া সালাউদ্দিন লাভলুর জনপ্রিয় নাটক ‘রঙের মানুষ’ এবং মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর ‘৬৯’ এ তার অভিনয় বাংলাদেশের দর্শকরা ভীষণ পছন্দ করেন।
তার অভিনীত ‘আলফা’ চলচ্চিত্রটি অস্কারেও গেছে। গেরিলা সিনেমায় শহীদ আলতাফ মাহমুদের চরিত্রে তার অভিনয়ও ছিল অনবদ্য।
আহমেদ রাজিব রুবেল ওরফে আহমেদ রুবেল ১৯৬৮ সালের ৩ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের রাজারামপুর গ্রামে জন্ম নিয়েছিলেন। তার মা-বাবার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে হলেও তিনি বড় হয়েছেন ঢাকা শহরে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে গাজীপুরে বাস করছিলেন।