ভোটের বছরে ঘুরেফিরে আসছে ‘ডিপফেক’ ও ‘সিনথেটিক মিডিয়া’র নাম। তথ্য প্রযুক্তির প্রসারে ভোটপ্রার্থীদের প্রচারের কৌশলে পরিবর্তন ঘটনায় সামনে আসছে শব্দগুলো।
বিশ্বের ৪৩টির বেশি দেশে ২০২৪ সালে জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে। এবার প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রচারের বাইরে বিশেষ জায়গা পাচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ভিডিওবার্তা।
ভোটের কয়েকদিন আগে প্রচলিত পদ্ধতির প্রচার বন্ধ করে বিভিন্ন দেশের নির্বাচন কমিশন। কিন্তু অনলাইনে প্রচার বন্ধে কোনও নীতিমালা না থাকায় এখন সেদিকেই ঝুঁকছেন প্রার্থীরা।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এবার নির্বাচনী প্রচারে ডিপফেক ভিডিওর ব্যবহার বাড়ছে চোখে পড়ার মতো। তবে এসব প্রচারে নৈতিক মানদণ্ড কতটা ঠিক থাকছে, তা নিয়ে সন্দিহান বিশ্লেষক-পর্যবেক্ষকরা।
ভারতে নির্বাচনী প্রচারে এআই
ভারতীয় রাজনীতির আইকন এম করুণানিধি। গত ২৩ জানুয়ারি ৮২ বছর বয়সী বন্ধু ও সহকর্মী রাজনীতিক টি আর বালুর আত্মজীবনীমূলক বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা জানাতে বড় পর্দায় ‘লাইভ’ হন তিনি।
ট্রেডমার্ক কালো চশমা, সাদা শার্ট আর কাঁধে জড়ানো হলুদ চাদর পরা করুণানিধির সাজ ছিল আকর্ষণীয়। আট মিনিটের বক্তব্যে করুণানিধি বইয়ের লেখককে অভিনন্দন জানান। পাশাপাশি তার ছেলে ও রাজ্যের বর্তমান নেতা এম কে স্টালিনের দক্ষ নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
এই করুণানিধি মারা যান ২০১৮ সালে। তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক দল দ্রাবিড়া মুন্নেত্রা কড়গমের (ডিএমকে) নেতা করুণানিধিকে এআইয়ের মাধ্যমে গত ছয় মাসে জনসাধারণের অনুষ্ঠানে এনিয়ে তৃতীয়বার ‘পুনরুজ্জীবিত’ করা হয়েছে।
কৃত্রিম করুণানিধি বলেন, “যখন কোভিড মহামারি পৃথিবীকে তছনছ করছিল, তখন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী জনগণের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন। মানুষের জীবন বাঁচাতে আপনি যেভাবে লড়াই করেছেন, সেটা জাতি জানে, আমিও জানি।”
ডিপফেক করুণানিধির ভিডিও তৈরি করেছিল মুওনিয়াম নামে এআই মিডিয়া নামের একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। এর প্রতিষ্ঠাতা সেন্থিল নয়গাম আল জাজিরাকে বলেন, “ডিপফেকের বাজার তৈরি হচ্ছে। চাইলে নির্দিষ্ট ব্যক্তির নামে কিছু বিবৃতি দেওয়া যায়। এতে এর মূল্য আরও বাড়ে।”
এআই করুণানিধির প্রথম প্রকাশ্য উপস্থিতি ছিল গত বছর সেপ্টেম্বরে একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠানে। পরে তার দলের আরেক প্রচার অনুষ্ঠানে তিনি দেখা দেন। এই পুনরুজ্জীবিত নেতা এখন প্রায়ই দলের কর্মীদের অভিনন্দন জানান। বিশেষ করে তার ছেলে স্টালিনের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন, এর লক্ষ্য তার জনপ্রিয়তা বাড়ানো।
করুণানিধির জনসম্মুখে শেষ সাক্ষাৎকার ছিল ২০১৬ সালে। তখনও তার কণ্ঠস্বর অতটা রুক্ষ ও শরীর দুর্বল হয়নি।
নয়গাম করুণানিধির সহজলভ্য তথ্য ব্যবহার করে একটি বক্তৃতা মডেল প্রশিক্ষিত করেন। করুণানিধির নব্বইয়ের দশকের প্রতিকৃতি পুনঃনির্মাণ করেন।
নয়াগম জানান, ডিএমকেকর্মীদের দেওয়া করুণানিধির বক্তৃতার রেকর্ড থেকেই তার বক্তৃতা মডেল তৈরি করা হয়েছে।
এআই করুণানিধি তৈরির অনুমোদন দিয়েছিলেন রাজ্যসভার সদস্য টিআর বালু। আল জাজিরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে সাড়া পায়নি।
করুণানিধি প্রায় দুই দশক ধরে তামিলনাড়ু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পাঁচবার মেয়াদ পূর্ণ করেছিলেন। বয়স্ক ভোটারদের মধ্যে এখনও তার প্রভাব অনেক।
তামিলনাড়ুর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এআই ভিডিওগুলোর প্রতিক্রিয়া দেখে ডিএমকে নেতৃত্ব আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে এআই করুণানিধির ভাষণ তৈরির কথা ভাবছে।
নৈতিক এবং আইনি ঝামেলা
নির্বাচনী প্রচারে ডিপফেক ভিডিওর ব্যবহারে কিছু নৈতিক ও আইনগত প্রশ্ন হাজির হয়েছে।
এবিষয়ে মোজিলা ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টওয়ার্দি এআইয়ের জ্যেষ্ঠ ফেলো অ্যাম্বার সিনহা বলেন, “কোনও জীবিত ব্যক্তির সম্মতিতে এআই ব্যবহার করে কৃত্রিম কণ্ঠস্বর ও ভিডিও তৈরি করা এক কথা। কিন্তু মৃত ব্যক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং তার ওপর অন্যের মতামত আরোপ করা সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়।”
ভারতের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান জারভিস কনসালটিংয়ের পরিচালক দিগগজ মোগরার মতে, আসন্ন নির্বাচনে ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে এআই-চালিত কন্টেন্ট মার্কেটিং, যেমন ভয়েস কল ও এসএমএস, অবতার তৈরিসহ বিভিন্ন ধরনের প্রচারের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ভারতে এর আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৬ কোটি ডলার।
তামিলনাড়ুতে প্রতিটি দলেরই বড় নেতা আর বেঁচে নেই। এদের মধ্যে অভিনেত্রী-রাজনীতিবিদ জয়ললিতা, এমজি রামচন্দ্রন ও বিজয়কান্ত উল্লেখযোগ্য। নয়গাম এসব নেতাদের ডিপফেক ভিডিও তৈরির জন্য দলগুলোর নিম্ন-স্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চলেছেন।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে নয়গাম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মান কি বাত অনুষ্ঠানের চার মিনিটের অডিও ক্লিপটি আট ভাষায় রূপান্তরিত করে সোশাল মিডিয়া এক্সে শেয়ার করেন। এরপরই দেশটিতে এমন ভিডিওর প্রতি আকর্ষণ বাড়ে। মূলত নির্বাচনী প্রচারে এআইয়ের বাজার তখন থেকে শুরু হয়।
২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনগুলোতে জনমতকে প্রভাবিত করতে এআইয়ের অপব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।
কয়েকদিন আগেই ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়ে গেল। সেখানেও নির্বাচনী প্রচারে সাবেক জেনারেল প্রবোও সুবিয়ান্তোকে নিজের ডিপফেক ভিডিও দিয়ে প্রচার চালাতে দেখা গেছে। ভোটারদের মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে সোশাল মিডিয়ায় ডিপফেক ভিডিও দিয়ে সয়লাব করে তার দল।
দক্ষিণ এশিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে এআইয়ের ব্যবহার ও এর অপব্যবহার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে।
অভিযোগ আছে, বাংলাদেশে সরকার সমর্থক ও বিরোধীদের অ্যাকাউন্টগুলো থেকে পাল্টাপাল্টি ডিপফেক ভিডিও ব্যবহার করে প্রচার করা হয়েছে।
পাকিস্তানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কারাগার থেকেই এআই দিয়ে নিজের সমর্থকদের সামনে বক্তৃতা দিয়েছেন। নিজের আইনজীবীদের কাছে তিনি বক্তব্য লিখে পাঠাতেন। পরে সেই লেখা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্টার্টআপ ইলেভেনল্যাবসের সফটওয়্যার ব্যবহার করে অডিও বক্তৃতায় রূপান্তরিত করা হয়। তার দলের অনেক নেতাকেও একই পন্থা অবলম্বন করতে দেখা গেছে।
মোজিলা ফাউন্ডেশনের সিনহা বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণায় এই ধরনের এআইয়ের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।”
গত ২১ জানুয়ারি ডিএমকে তাদের দ্বিতীয় বার্ষিক যুব শাখা সম্মেলন করে সালেম শহরে। খোলা মাঠে আয়োজিত ওই বিশাল সম্মেলনে ৫ লাখের বেশি সমর্থক অংশ নিয়েছিল। তা ছিল দলটির এ বছরের জাতীয় নির্বাচনের প্রচারের আনুষ্ঠানিক সূচনা।
সভায় দলটির নেতারা বক্তব্যের মাধ্যমে ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) চ্যালেঞ্জ করেন। পাশাপাশি তারা কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার যে রাজ্যগুলোর ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে, এনিয়ে সমালোচনা করেন।
ওই প্রচারে এআই করুণানিধি আশ্চর্যজনকভাবে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে উপস্থিত হন।
তিনি বলেন, “অনেক কষ্টে অর্জিত রাজ্যের অধিকার হারিয়ে গেছে বিজেপির ১০ বছরের শাসনামলে।” তিনি তামিলনাড়ুর প্রতি বিজেপির অব্যাহত শত্রুতার বিষয় নিয়েও কথা বলেন।
তিন মিনিটের ওই ভিডিও বক্তৃতায় এআই করুণানিধি রাজ্যের অধিকার জোরদারের আহ্বান জানান। তরুণ কর্মীদের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য লড়াই করার জন্য উৎসাহিত করে তার বক্তৃতা শেষ হয়।
ডিএমকের মুখপাত্র ধরনিধরন সেলভাম আল জাজিরাকে বলেন, “দলের ডিজিটাল মিডিয়া শাখা কর্মীদের উৎসাহিত করতে ওই ভিডিও তৈরি করেছে। এতে মনে করি কর্মীরা উদ্দীপ্ত হয়েছিলেন।”
চেন্নাইয়ের রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুমন্ত রমন বলেন, “মৃত নেতারা নির্বাচনী প্রচারে এখন এগিয়ে আছেন। তারা এখনও জীবিত নেতাদের চেয়ে জনপ্রিয়। তামিলনাড়ুতে এখনও জয়ললিতা বা করুণানিধির মতো জনপ্রিয় নেতা কেউ নেই।”
তার মতে, গত ত্রিশ বছরে তামিলনাড়ুতে অর্ধ ডজনেরও বেশি রাজনৈতিক দল গড়েছেন অভিনেতারা। অনেক নেতাই চলচ্চিত্রজগত থেকে এসেছেন। সেখানে তাদের অভিনয়ের কারণে সবসময়ই জনগণের চোখে তারা দেবতুল্য।
জয়ললিতা যেমন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন, তেমনি করুণানিধি ছিলেন খ্যাতনামা চিত্রনাট্যকার।
মৃত ব্যক্তির জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগানো
বিশ্লেষক রমন মনে করেন, মৃত নেতাদের ডিপফেক ভিডিওর মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা দলের কর্মীদের উজ্জীবিত করেছে। কিন্তু ভিডিওগুলো অতটা ভালো হয়নি। বর্তমান এআই প্রযুক্তিতে আরও ভালো ডিপফেক ভিডিও তৈরি সম্ভব।
বই উদ্বোধনের ভিডিওতে স্পষ্ট যে ভিডিওটি কৃত্রিম। কারণ ঠোঁটের সঙ্গে কণ্ঠের কোনও মিল ছিল না।
এআই করুণানিধির নির্মাতা নয়গাম বলেন, “অসম্পূর্ণ ভিজ্যুয়ালের অন্যতম কারণ হল উচ্চ মানের ভিডিও ডাটার অভাব। ফলে ইন্টারনেটে যা পাওয়া যায়, তার ওপরই নির্ভর করতে হয়।”
যুব সম্মেলনে প্রচারিত ভিডিওটি কিছুটা ভালো ছিল। তবে করুণানিধির মুখের কাছাকাছি অংশে ত্রুটি ছিল। তবুও ইউটিউবে কেউ কেউ ‘সুপার’ মন্তব্য করে। সোশাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলোতেও দর্শকদের প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক ছিল। অবশ্য উভয় ভিডিওই যে এআই দিয়ে তৈরি, তা বোঝা যাচ্ছিল।
ভারতে ২০২০ সালের নির্বাচনী প্রচারে প্রথমবারের মতো ডিপফেক ভিডিও ব্যবহার হয়। বিজেপি নেতা মনোজ তিওয়ারি নিজের ডিপফেক ভিডিও তৈরি করান। সেখানে দেখা যায়, তিনি হারইয়ানভি ও ইংরেজিতে কথা বলছেন। অথচ তিনি এ দুটি ভাষার একটিও জানেন না। সেগুলো এআই দিয়ে তৈরি, এই তথ্য গোপন করার কারণে বিশেষজ্ঞরা বেশ নিন্দা করেছিল তিওয়ারির।
অনেকে মনে করেন রাজনীতিকদের এআই ভিডিও তৈরি করা আর মৃত নেতাদের ছবি ব্যবহার করা একই ব্যাপার। ঠিক যেমন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস জওহরলাল নেহেরু, ইন্দিরা গান্ধী বা রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর তাদের ছবি ব্যবহার করে। উভয়ক্ষেত্রেই দলগুলো তাদের মৃত নেতাদের জনপ্রিয়তার সুযোগ নেয়। তবে ডিপফেকে তাদের মুখ দিয়ে নিজেদের বক্তব্য প্রচার করা নীতিবিরুদ্ধ কি না, সেই প্রশ্ন রয়েই যায়।
মৃত ব্যক্তির কণ্ঠস্বর ও চেহারার অধিকার কার?
দিল্লিভিত্তিক প্রযুক্তি নীতি বিশেষজ্ঞ দেবিকা মালিক বলেন, “ভারতীয় আইনে মৃত ব্যক্তির ছবি বা কণ্ঠস্বরের অধিকারের কথা স্পষ্টভাবে বলা নেই। তাই এটা আইনিভাবে সমর্থনযোগ্য না। তবে নৈতিক দিক থেকে বিবেচনা করতে হবে যে, মৃত ব্যক্তির সম্মতি আছে কিনা।”
ক্রমবর্ধমান কৃত্রিম মিডিয়া অর্থনীতি
ভারতের রাজনীতিকরা আগামী নির্বাচনী প্রচারে এআই ব্যবহারের নতুন নতুন কৌশল খুঁজছেন।
জারভিস কনসাল্টিংয়ের মোগরা জানান, কিছু প্রার্থী ভোটারদের ফোন করে ভোট চাওয়ার জন্য এআই দিয়ে তৈরি করা তাদের নিজেদের কণ্ঠস্বরের রেকর্ডিং ব্যবহার করছেন। এগুলোতে প্রত্যেক ভোটারের নাম ডাকা হয়। এই কাজ সস্তায় করতে অনেক কোম্পানি দেশব্যাপী ঘুরে বেড়াচ্ছে।
অভিনেতা-অভিনেত্রী ও সিইওরা ডিপফেক ভিডিও ব্যবহার করত। এখন সেই বাজার রাজনীতির মাঠেও ছড়িয়ে পড়েছে। পলিম্যাথ সলিউশনের মত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানগুলো রাজনীতিকদের কণ্ঠস্বরকে এআই দিয়ে নকল করে কর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
মোগরা সতর্ক করে বলেছেন, “আগামী নির্বাচনে প্রচারে এআই ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হবে। এটি দুই ধারের তলোয়ার। এর ফলে অনেক মিথ্যা তথ্য ও কুৎসা তৈরি হবে। আমার মনে হয় এর সুবিধা কম। ভুল তথ্য ও কুৎসা ছড়ানোর সমস্যা অনেক বেশি হবে।”
সামাজিক প্রভাবের দিক থেকে এআই ভিডিও ভোটারদের মনোভাবকে কতটা প্রভাবিত করতে পারে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সিনহা বলেন, “করুণানিধির মতো জনপ্রিয় নেতার ক্ষেত্রে নিম্নমানের ভিডিওও বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে। একে ভাইরাল হতে সাহায্য করতে পারে।”
সিনহার সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, অভিনেতা বা রাজনৈতিক পরামর্শদাতারা, যাদের কোনও দলীয় সম্পর্ক নেই, তারাই রাজনৈতিক বার্তা ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে।
বিশেষজ্ঞ দেবিকা মালিক বলেন, “নির্দিষ্ট নেতা বা পরিবারের আবেগের উপর ভিত্তি করে বার্তা তৈরি করা, বিশেষ করে যখন এটি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয়, তখন এটি একটি কার্যকর যোগাযোগ কৌশল হতে পারে। ভোটারদের মতামত পরিবর্তন করতে পারে।”
তথ্যসূত্র : আল জাজিরা, ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস, বিবিসি