কোটা সংস্কারের আন্দোলনের মধ্যে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, বিদেশে গুজব ছড়ানোর জন্যই তারা ডেটা সেন্টারে হামলা চালিয়েছিল।
আন্দোলনের মুখে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে কোটা সংস্কার করে প্রজ্ঞাপন জারির পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন বলে বাসস জানিয়েছে।
ঢাকায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বাড়িতে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। আনিসুল হকের পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরাফাতও বক্তব্য রাখেন।
প্রতিমন্ত্রী আরাফাত বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করেছে বিএনপি-জামায়াত।
তিনি বলেন, “বিএনপি-জামায়াত চক্র জানত যে, তারা তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী সারাদেশে ইন্টারনেট ব্যবস্থাকে ব্যাহত করতে পারলে বিদেশে অপতথ্য পাঠানো সম্ভব হবে, যা বিশ্বগণমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রতিফলিত হবে এবং একপাক্ষিক মিথ্যা তথ্য পৌঁছে দেবে।
“ইন্টারনেট না থাকায় আমরা সমস্যায় পড়েছি। আমরা দেশের বাইরে কোথাও যোগাযোগ করতে পারছি না। এঅবস্থা বিদেশে তাদের গুজব সিন্ডিকেটকে গুজব প্রচারণাকে জোরদার করতে সহায়তা করবে।”
এই আন্দোলন সহিংসতায় গড়ানোর পর গত বুধবার মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তখন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছিলেন, সহিংস পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে ওই পদক্ষেপ নেন তারা।
এরপর বৃহস্পতিবার ঢাকার মহাখালীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে অগ্নিসংযোগের পর সারাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটও বন্ধ হয়ে যায়। তথন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, মহাখালীর ডেটা সেন্টারে অগ্নিকাণ্ডের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পাশের ভবন খাজা টাওয়ারে বিভিন্ন ইন্টারনেট গেটওয়ে কোম্পানির ডেটা সেন্টার রয়েছে। কয়েক মাস আগে খাজা টাওয়ার আগুনে পুড়লে ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হয়েছিল।
আইনমন্ত্রীর বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনের সময় ইন্টারনেট ছিল না। তবে পাঁচ দিন পর মঙ্গলবার রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ফিরলেও গতি ছিল বেশ মন্থর।
প্রতিমন্ত্রী আরাফাত এই আন্দোলন ঘিরে ‘অপতথ্যের’ বিরুদ্ধে ‘সত্য’ তথ্য তুলে ধরার জন্য বাংলাদেশি সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “আপনারা দেখেছেন যে সন্ত্রাসী, হামলাকারী, জঙ্গি, বিএনপি ও জামায়াত-শিবির শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্যে অনুপ্রবেশ করে ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালায়।
“তারা বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), সেতুভবন, ডেটা সেন্টার ও টোল প্লাজাসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা চালায়।”
সরকার বাধ্য হয়েই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “আপনি যখন আক্রান্ত হন, তখন নিজেকে রক্ষা করা আপনার অধিকার।
“যখন আমরা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করলাম, তখন সংঘাতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। কাজেই, হামলাকারীরাই হতাহতের জন্য দায়ী।”