Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

ঈদে আকাশপথের টিকেটের দামও আকাশছোঁয়া 

বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট। ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট। ছবি : সংগৃহীত
[publishpress_authors_box]

কোরবানির ঈদ ঘিরে চলবে কোটি মানুষের গন্তব্যে পৌঁছানোর দৌড়ঝাঁপ। তবে এবার আকাশপথের টিকেটের দাম বাড়িয়েছে দুশ্চিন্তা।  

বিমান সংস্থাগুলো বলছে, অভ্যন্তরীণ রুটে এবার ঈদ মৌসুমের একটি টিকেটের দাম পড়বে ৮ হাজার থেকে সাড়ে ১১ হাজার টাকা, যা আরও বাড়তে পারে। স্বাভাবিক সময়ে এই টিকেটের দাম থাকে ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা।

দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস বাংলা, নভোএয়ার ও এয়ার অ্যাস্ট্রা। ঢাকা, যশোর, সৈয়দপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল- এই ৮টি রুটে ৪টি ফ্লাইট অপারেটরের প্রতিদিন প্রায় ১৫০টি ফ্লাইট চলাচল করে।

এসব রুটে তাদের যাত্রী বহনক্ষমতা বর্তমানে একদিনে সাড়ে ১০ হাজার। কমবেশি প্রতিদিন যাত্রী চলাচল করে প্রায় ৯ হাজার। ঈদের সময় ঘনিয়ে এলে সক্ষমতার চেয়ে চাহিদা বেড়ে যায়। তখন এভিয়েশন টিকেট প্রাইস পলিসি অনুযায়ী লো অফারে টিকেট পাওয়া যায় না। কিনতে হয় বেশি মূল্যে। 

ঈদুল আজহা ১৭ জুন। ঈদে এবার লম্বা ছুটি। ১৪ ও ১৫ জুন শুক্র ও শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি। এর পর ১৬ থেকে ১৮ জুন রবি, সোম ও মঙ্গলবার ঈদের ছুটি। ১৯ ও ২০ জুন অনেকেই ঐচ্ছিক ছুটি কাটাবেন। তারপর ২১ ও ২২ জুন আবারও শুক্র ও শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি। সবমিলিয়ে টানা ৯ দিনের ছুটি।

দীর্ঘ এই ছুটির সুযোগ কেউই হাতছাড়া করতে চাইবে না। এজন্য সড়ক-নৌপথের মতো আকাশপথের টিকেটের চাহিদা বেড়েছে। বেড়ে গেছে টিকেটের মূল্যও।

টিকেটের দাম সম্পর্কে জানতে দেশের চারটি বিমানসংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে সকাল সন্ধ্যা। 

নভোএয়ার কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদের দিন ছয়েক আগেই ১০ জুন সোমবার দুপুর ১২টায় সৈয়দপুরের ১৪ জুন সকালের ফ্লাইটের টিকেট মূল্য ছিল সাড়ে ১১ হাজার টাকা। এই রুটে একই দিন সন্ধ্যা ৬টার ফ্লাইটের আরেকটি বেসরকারি বিমানসংস্থা ইউএস বাংলার একটি টিকেটের দাম ছিল ১০ হাজার টাকা, বিমানের ১০ হাজার ৪০০ টাকা এবং এয়ার অ্যাস্ট্রার ছিল ১০ হাজার টাকা।

ঈদ কাছাকাছি চলে এলে এর দাম ১২ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তাদের ধারণা, তখন ১২ হাজার টাকা গুনেও সৈয়দপুরের টিকেট পাওয়া না-ও যেতে পারে।

এত গেল সৈয়দপুরের ঈদ-টিকেটের দরদাম। ১৩, ১৪, ১৫ ও ১৬ জুনের যশোর, রাজশাহীর টিকেটের দামও ৮ হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেছে। তবে সিলেট ও চট্টগ্রামের টিকেট পাওয়া যাচ্ছে ৬ হাজার টাকায়।

এ বিষয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (মার্কেটিং সাপোর্ট অ্যান্ড পিআর) কামরুল ইসলাম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “১৩ জুন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হবে। একইদিন অফিস-আদালত, শিল্পকারখানাগুলোরও ছুটি শুরু। তার ওপর ৯ দিনের লম্বা ছুটি। তাই লো প্রাইসে টিকেট বিক্রি সম্ভব নয়।

“আমাদের ঈদের ৮০ ভাগেরও বেশি টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে। কাল-পরশুর মধ্যে বাকি টিকেটও ফুরিয়ে যাবে।”

ঈদের টিকেট কেনার জন্য কাউন্টারের সামনের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। প্রযুক্তির ব্যবহারে দেশ-বিদেশে বসেই অনলাইনে ক্রেডিট কার্ডে আকাশপথের টিকেট কেনা যায়। পশু কোরবানির কারণে ঈদুল আজহার সময় প্রবাসীরাও এই সুযোগ নিয়ে থাকেন। সেজন্য কোরবানির ঈদের টিকেটের চাহিদা ঈদুল ফিতরের চেয়ে বেশি থাকে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোসরা ইসলাম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমাদের ৯০ শতাংশ টিকেট বিক্রি শেষ। ঈদে টিকেটের চাহিদা থাকায় ৭ জুন আমরা ১৬ জুন পর্যন্ত সৈয়দপুর, রাজশাহী, যশোর ও বরিশালে অতিরিক্ত ২০টি ফ্লাইট চালাব। ঈদের পর থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত এসব রুটে ৯টি অতিরিক্ত ফিরতি ফ্লাইট দেওয়া হবে।”

দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে সাধারণত কানাডার ড্যাশ-৮, ফ্রান্সের এটিআর-৬০০ মডেলের উড়োহাজার দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়। যেগুলোর যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৭০ জনের বেশি। তবে ইউএস বাংলা, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কক্সবাজার, সিলেট ও চট্টগ্রাম রুটে বৃহদাকারের এয়ারক্রাফটও ব্যবহার করে। ঈদের মতো ছুটির সময় ঢাকা থেকে ফ্লাইটে যাত্রী পরিপূর্ণ থাকে। তবে ফিরতি ফ্লাইট থাকে একেবারেই ফাঁকা।

এয়ার অ্যাস্ট্রার উপ-ব্যবস্থাপক সাকিব হাসান শুভ সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “ঈদের সময় ফ্লাইটে শতভাগ যাত্রী থাকে। কিন্তু ফিরতি ফ্লাইটে ২০ ভাগও যাত্রী মেলে না।”  

ঈদপূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে যাত্রী কমার কারণ কী— এ প্রশ্নের জবাবে অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “ঈদের সময় ১২ হাজার টাকা দাম হলেও ফিরতি টিকেট ২ হাজার টাকা হয়ে যায়। এটাই ওপেন মার্কেট ইকোনমির নিয়ম। তাছাড়া পদ্মাসেতুর জন্য যশোর, বরিশাল ফ্লাইটে যাত্রী কমে গেছে। অন্যদিকে ডলার রেট বেড়েছে। সবকিছু মিলিয়ে ঈদে টিকিটের দাম বেড়েছে।”   

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত