Beta
মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪

বিক্ষোভের কর্মসূচি আওয়ামী লীগের, সুযোগ নেই বললেন প্রেস সচিব

প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
[publishpress_authors_box]

নূর হোসেন দিবসে ঢাকায় আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি দিলেও তা করতে না দেওয়ার ঘোষণা এসেছে সরকারের তরফে। অন্যদিকে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকে তার দল আওয়ামী লীগ আছে ছন্নছাড়া এক অবস্থায়।

দলের সভাপতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারিয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। দলটির বেশিরভাগ নেতাকর্মীও আছেন আত্মগোপনে। সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ দলটির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের কয়েকজন হত্যাসহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত দলীয়ভাবে কোনও কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়নি আওয়ামী লীগকে।

গত ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী ঘিরে শোক দিবসের কর্মসূচি পালনে দলীয় প্রধানের নির্দেশনা থাকলেও মাঠে দেখা মেলেনি দলটির নেতাকর্মীদের। এরপর ৩ নভেম্বর জেল হত্যা দিবস ঘিরে দলটির পক্ষ থেকে কর্মসূচি দেওয়া হলে তাও পালন করতে দেখা যায়নি নেতাকর্মীদের।

এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগের ফেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজে দেওয়া এক পোস্টে ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে ঢাকার জিরো পয়েন্টে শহীদ নূর হোসেন চত্বরে দলটির বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

এইচ এম এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকা অবরোধ চলাকালে বুকে-পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক-গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লিখে রাজপথে নেমে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন যুবলীগের কর্মী নূর হোসেন। তার আত্মদান বাংলাদেশে গণতন্ত্রের লড়াইয়ে প্রেরণা হয়ে আছে।

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের ফেইসবুক পোস্টে বলা হয়, “অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী অগণতান্ত্রিক এই গোষ্ঠীর মতিভ্রম হয়েছে। ফলে তারা রাষ্ট্রে ও সমাজে বিদ্যমান গণতান্ত্রিক শক্তিকে ধ্বংস করে গোষ্ঠীতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অভিপ্রায়ে রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হচ্ছে এবং অভূতপূর্ব নৈরাজ্যবাদ কায়েম করেছে।

“বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে সঠিক পন্থায় আনতে হলে গণতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাসী জনগণকে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে এবং এই অগণতান্ত্রিক অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চলমান রাখতে হবে। এই লড়াইয়ে শহীদ নূর হোসেনের আত্মত্যাগ আমাদের সীমাহীন প্রেরণা জোগাবে।”

বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে ফেইসবুক পোস্টে বলা হয়, “আগামী ১০ নভেম্বর রবিবার বিকাল ৩টায় শহীদ নূর হোসেন চত্বরে অগণতান্ত্রিক শক্তির অপসারণ এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

“মিছিলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতাকর্মীসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী সাধারণ মানুষকে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।”

একইসঙ্গে দেশব্যাপী সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয় ফেইসবুক পোস্টে।

এদিকে, শনিবার দুপুর ১২টার পরপর ফেইসবুকে নিজের ফেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, আওয়ামী লীগকে বিক্ষোভ করতে দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই।

প্রেস সচিবের পোস্টে বলা হয়, আওয়ামী লীগ তার বর্তমান রূপে একটি ফ্যাসিবাদী দল। এই ফ্যাসিবাদী দলকে বাংলাদেশে বিক্ষোভ করতে দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই।”

কেউ কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করলে তাকে কঠোরভাবে মোকাবেলার হুঁশিয়ারি দিয়ে পোস্টে বলা হয়, “গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নির্দেশে কেউ সমাবেশ, জমায়েত ও মিছিল করার চেষ্টা করলে তাকে পূর্ণ শক্তি দিয়ে মোকাবেলা করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।”

অন্তর্বর্তী সরকার কোনও ধরনের সহিংসতা বা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি লঙ্ঘনের কোনও প্রচেষ্টাকে বরদাস্ত করবে না বলেও সতর্ক করেন প্রেস সচিব শফিকুল।

রাতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ রবিবার দুপুরে নূর হোসেন চত্বরে তাদের কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে গণজমায়েতের এই কর্মসূচি পালন হবে ‘ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ মঞ্চ’ ব্যানারে। তবে কর্মসূচির আয়োজক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত