নতুন নাদাল। এতদিন এই নামেই ডাকা হতো কার্লোস আলকারাজকে। তিনি অবশ্য নিজের নামেই পরিচিত হতে চাইতেন সবসময়। এখন থেকে কেউ আর নতুন নাদাল বলবে না তাকে। ২১ বছর বয়সে চারটা গ্র্যান্ড স্লাম জিতেন যিনি, তাকে অন্যের নামে পরিচিত হতে হবে কেন?
পাঁচ সপ্তাহের ব্যবধানে ফ্রেঞ্চ ওপনের পর আলকারাজ জিতলেন উইম্বলডন এককের শিরোপা। ২৪ গ্র্যান্ড স্লাম জেতা নোভাক জোকোভিচকে গুঁড়িয়ে ধরে রাখলেন সেন্টার কোর্টের শিরোপা।
আজ ফাইনালটা জিতলেন ৬–২, ৬–২, ৭–৬ (৭/৪) গেমে, মাত্র ২ ঘণ্টা ২৭ মিনিট খেলেই। এটা তার চতুর্থ গ্র্যান্ড স্লাম। স্প্যানিশ এই তরুণের এমন সাফল্যে ইউরো ফাইনালের আগে আত্মবিশ্বাস পেতেই পারেন ইয়ামালরা।
উন্মুক্ত যুগে বিশ্বের চতুর্থ খেলোয়াড় হিসাবে ২১ বা তার কম বয়সে একাধিক বার উইম্বলডন ফাইনালে পৌঁছানোর রেকর্ড আগেই গড়েছিলেন আলকারাজ। এ বছর ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতে তরুণতম খেলোয়াড় হিসেবে অনন্য নজির গড়েছেন টেনিসের তিন ধরনের কোর্টেই গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের।
এবার পাঁচ সপ্তাহের ব্যবধানে ফ্রেঞ্চ ওপেন আর উইম্বলডন জিতে পাশে বসলেন পাঁচ কিংবদন্তি- রড লেভার, বিয়ন বর্গ, রাফায়েল নাদাল, রজার ফেদেরার ও নোভাক জোকোভিচের।
উইম্বলডনে রজার ফেদেরারের আট ট্রফি জেতার রেকর্ড ছোঁয়ার অভিযান ছিল নোভাক জোকোভিচের। পাশাপাশি উইম্বলডনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে হাতছানি ছিল শিরোপা জয়ের। কিন্তু আলকারাজের কাছে পাত্তাই পেলেন না তিনি। তাই বাড়ল ২৫তম গ্র্যান্ড স্লামের অপেক্ষা।
গত উইম্বলডনের ফাইনালে উঠলেও আলকারাজ যে জোকোভিচকে হারিয়ে দেবেন, ভাবতে পারেননি অনেকে। চার ঘণ্টা ৪২ মিনিটে পাঁচ সেটের লড়াইয়ে অভাবিত সেই জয়ই পেয়েছিলেন এই স্প্যানিয়ার্ড। জিতেছিলেন ১–৬, ৭–৬ (৮/৬), ৬–১, ৩–৬, ৬–৪ গেমে। সেই তুলনায় এবারের ফাইনালটা একতরফাই হলো।
হাঁটুর চোট এত দ্রুত সারিয়ে জোকোভিচের ফাইনালে পৌঁছানোটাই ছিল বিস্ময়ের। দশম উইম্বলডন ফাইনালে ওঠার পথে হেরেছিল কেবল দুই সেট। সেই জোকোভিচ কিনা ফাইনালে হেরেছিলেন প্রথম দুই সেট! তাও ৬-২, ৬-২ গেমে।
তৃতীয় সেটটা জিতলেই টানা দ্বিতীয়বার উইম্বলডন নিশ্চিত হয়ে যেত আলকারাজের। কিন্তু তিনটি চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট বাঁচিয়ে ম্যাচে ফিরেন জোকোভিচ। তৃতীয় সেটে ৫-৪’এ পিছিয়ে থেকে করেন ৫-৫। এরপর করে ফেলেন ৬-৫। উইম্বলডনের গ্যালারি থেকে রব উঠে ‘‘জোকোভিচ, জোকোভিচ’’ বলে।
সাবেক তারকা প্যাট ক্যাশ তখন বলছিলেন, ‘‘এটা হতে পারে সর্বকালের সেরা প্রত্যাবর্তনের ঘটনা।’’ আলকারাজের দাপেটে তা আর হয়নি। বরং আলকারাজ বোঝালেন, সামনে সময় এখন শুধুই তার।