গত বছর লর্ডস টেস্টে একটা বাউন্সার ডাক করেছিলেন জনি বেয়ারস্টো। এরপর ক্রিজ ছেড়ে এগিয়ে যান কিছুটা। সুযোগটা নিয়ে স্টাম্প ভাঙেন অস্ট্রেলিয়ার উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারি।
বাধ্য হয়ে থার্ড আম্পায়ার দিয়েছিলেন আউট। এ নিয়ে সমালোচনায় জর্জরিত হয়েছেন ক্যারি। পেয়েছেন মৃত্যুর হুমকি। এমনকি সেই ম্যাচ চলার সময়ই ইংলিশ পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড বলেছিলেন,‘‘তোমাকে এই জঘন্য আউটটার জন্য মনে রাখবে সবাই।’’
অ্যালেক্স ক্যারি আজ (সোমবার) ক্রাইস্টচার্চে ৯৮ রানের যে ইনিংসটি খেলে অস্ট্রেলিয়াকে জেতালেন, এই কারণেও তাকে লোকে মনে রাখবে বহুদিন। নিউজিল্যান্ডের ২৭৯ তাড়া করতে নেমে ৮০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল অস্ট্রেলিয়া।
সেই খাদের কিনারা থেকে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ক্যারির অপরাজিত ৯৮ রানে ভর করে। আর ২ রান হলে সেঞ্চুরিও হতে পারত ক্যারির। ক্রিজের অপর প্রান্তে তখন ব্যাট করছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স।
পুরো একটা দিন বাকি ছিল। হাতে তখনও ৩ উইকেট। বেন সিয়ার্সের করা ৬৫তম ওভারের শেষ বলটা চাইলেই ছেড়ে দিতে পারতেন কামিন্স। সেঞ্চুরির জন্য স্ট্রাইক দিতে পারতেন ক্যারিকে। সেটা না করে আলগা বলটা পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারি মেরে ৩ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন কমিন্স।
ম্যাচ শেষে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, চাইলেই কি ক্যারিকে সেঞ্চুরির সুযোগ দিতে পারতেন না? কামিন্সের জবাব, ‘‘আসলে গত কয়েক ঘণ্টায় সবাই স্নায়ুর চাপে ভুগছিল, উত্তেজনা ছিল অনেক। আমাদের জয়টা অসাধারণ। তখন আসলে আমার ধারণাই ছিল না ক্যারি ৯৮ রানে অপরাজিত আছে।’’
১২৩ বলে ১৫ বাউন্ডারিতে ৯৮ রানে অপরাজিত ছিলেন ক্যারি। সফল রান তাড়ায় স্বীকৃত উইকেটকিপার হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংসটাই এখন অ্যালেক্স ক্যারির। সর্বোচ্চ ১৪৯* রান করেছিলেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, ১৯৯৯ সালে হোবার্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে। এই ইনিংসের পাশাপাশি ১০টি ডিসমিসাল করায় ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জিতেছেন ক্যারি।
২৫০ রানের বেশি তাড়া করে বাউন্ডারি মেরে টেস্ট জেতানোর (উইনিং শট) এটা তৃতীয় নজির কামিন্সের। ২০১১ সালে জোহানেসবার্গে ৩১০ তাড়া করে ইমরান তাহিরকে বাউন্ডারি মেরে কামিন্স নিশ্চিত করেছিলেন জয়। এরপর গত বছর অ্যাশেজে বার্মিংহামে ২৮১ রান তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া জিতে কামিন্সের বাউন্ডারির উইনিং শটে। সেই ধারাবাহিকতায় আজও (সোমবার) বাউন্ডারি মেরে নিশ্চিত করলেন কিউইদের বিপক্ষে জয়।