পাঁচ মাস আগে বিয়ে করেছিলেন বরিশালের নাবিক মো. আলী হোসেন। দুই মাস আগে যোগ দেন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে। কথা ছিল, ঈদুল আজহায় বাড়িতে যাবেন, ভাইদের সঙ্গে পশু কোরবানিতে অংশ নেবেন। স্ত্রীকে কথা দিয়েছিলেন, ঈদের পর দুজনে মিলে দূরে কোথাও ঘুরতে যাবেন।
এসব পরিকল্পনার কথা আর ভাবতে চান না আলী হোসেনের পরিবারের সদস্যরা। তাদের এখন একটাই প্রার্থনা, সুস্থ শরীরে নিরাপদে আলী হোসেনের দেশে প্রত্যাবর্তন।
মঙ্গলবার ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়া এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের নাবিক মো. আলী হোসেনের বাড়ি বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়নের উমারপাড়া গ্রামে।
জিম্মি হওয়ার পর টেলিফোনে সেই খবর নিজেই জানিয়েছিলেন আলী হোসেন। বলেছিলেন, মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত হয়ত আর যোগাযোগ হবে না।
সেই থেকে উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে স্বজনদের। কান্নায় ভেড়ে পড়ছেন মা নামিমা পারভিন আর স্ত্রী ইয়ামনি বেগম।
সদ্য বিবাহিত ইয়ামনি জানালেন, কোরবানির ঈদে বাড়িতে ফেরার কথা ছিল তার স্বামীর। ঈদের পর দুজনে মিলে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন আলী। কিন্তু এখন স্বামীকে ফেরত পাওয়া ছাড়া আর কিছু চান না পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার এই তরুণী।
আলী হোসেনের বাবা ইমাম হোসেন মোল্লা বলেন, বাকি ২২ নাবিকের সঙ্গে তার ছেলেকেও নিরাপদে ফিরে পেতে চান তিনি। এই অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি চান তারা।
বিশারকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শান্ত জানান, ছোটবেলা থেকেই মেধাবী হিসেবে পরিচিত আলী হোসেন। এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছিলেন তিনি। পরে ভর্তি হন নারায়ণগঞ্জের মেরিন একাডেমিতে, সেখানে চার বছর লেখাপড়া শেষে ২০২০ সালে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন।