ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি যখন তুলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, তখন ‘সহজ’ আরেকটি পথ দেখালেন বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগকে যদি বাতিল করতেই হয় রাজনৈতিকভাবে করতে হবে। এজন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি নির্বাচিত সরকার দরকার।”
সোমবার চট্টগ্রাম নগরীর ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপি সমর্থিত সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আলোচনা সভায় একথা বলেন আমীর খসরু। একই অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নতুন মেয়র শাহাদাত হোসেনকেও সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু।
দেড় দশক পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে অভ্যুত্থানে গত আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে।
এরপর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে। আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিস্ট’ আখ্যায়িত করে দলটি নিষিদ্ধের দাবি এখন জানিয়ে আসছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
আমীর খসরু বলেন, “অন্য কোনও প্রক্রিয়ায় বাতিলে গেলে সেই বাতিল কিন্তু সাময়িক কাজ করবে; দীর্ঘমেয়াদে কাজ করবে না। জনগণ যখন বাতিল করবে আওয়ামী লীগকে; সেটাই হচ্ছে আসল বাতিল। আমাদের ওদিকে যেতে হবে।”
এবার আন্দোলন চলার মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতে ইসলামীকে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করেছিল। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন এই সরকার কবে নাগাদ নির্বাচন দেবে, তা এখনও প্রকাশ করেনি। তবে দেড় যুগ ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির নেতারা দ্রত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে।
আমীর খসরু বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ তার মালিকানা ফিরে পাবার আকাঙ্ক্ষায় অপেক্ষা করছে, তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের অপেক্ষা করছে, নির্বাচিত সংসদ, সরকার গঠনের জন্য অপেক্ষা করছে, যে নির্বাচিত সংসদ ও সরকার জনগণের কাছে জবাব দেওয়ার জন্য দায়বদ্ধ থাকবে। অন্য কোনও সরকার এর জন্য দায়বদ্ধ থাকবে না।”
অন্তর্বর্তী সরকার যেসব ক্ষেত্রে সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে, তা নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে করার পক্ষপাতি এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, “ক্ষমতায় যেদিন বিএনপি বসবে, সেদিন থেকে সংস্কার কাজ শুরু হবে। একটা দিনও আমরা নষ্ট করবো না।
“বিচার বিভাগের সংস্কার, শিক্ষাখাত, ব্যবসায়ীদের বিষয়, সব খাতের সংস্কার, সবকিছু প্রস্তুত। ডে-ওয়ান থেকে সংস্কারের কাজ শুরু হবে। আর কারা কী করবে, আমরা জানি না, আমরা কী করব, সেটা আমরা জানি।”
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরীর পরিচালনায় এই সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চসিকের নতুন মেয়র শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ।