সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যায় জড়িত অভিযোগে গ্রেপ্তার মোস্তাফিজুর রহমান ফকিরও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এই ঘটনায় বাংলাদেশে গ্রেপ্তার সাতজনের মধ্যে তাকে নিয়ে পাঁচজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন।
মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয় বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন।
জবানবন্দিতে মোস্তাফিজ কী বলেছেন, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
গত বুধবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মোস্তাফিজকে, তার সঙ্গে ফয়সাল আলী সাহাজী নামে আরেকজনও গ্রেপ্তার হন। তারা দুজনই কলকাতায় আনারকে খুনে সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে ডিবির দাবি।
গ্রেপ্তারের পরদিন মোস্তাািফজ ও ফয়সাল দুজনকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের মাধ্যমে ছয় দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
মোস্তাফিজ স্বীকারোক্তি দিতে রাজি হওয়ায় আদালত তাকে মঙ্গলবার আদালতে আনা হয়েছিল। জবানবন্দি দেওয়ার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ফয়সালকে এখনও ডিবি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গ্রেপ্তার সাতজনের মধ্যে এখন মোস্তাফিজসহ কারাগারে রয়েছেন- পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির নেতা শিমুল ভুইয়া, তার ভাতিজা তানভির ভূইয়া, শিলাস্তি রহমান, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু এবং ওই কমিটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু।
তাদের মধ্যে মিন্টু বাদে অন্য সবাই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ঝিনাইদহ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনার গত ১২ মে কলকাতায় যাওয়ার পরদিনই কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিবা গার্ডেন্সের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন বলে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ২২ মে জানায়। তার লাশের সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ বলছে, হত্যার পর আনারের দেহ খণ্ড খণ্ড করে ছড়িয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন স্থানে।
আনারকে খুন করতে সাতজন সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে দাবি করে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, তাদের সবাইকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিবি শুরুতেই গ্রেপ্তার করেছিল শিমুল ভুইয়া, তানভির ভূইয়া ও শিলাস্তি রহমানকে। আসামিদের জবানবন্দির সূত্র ধরে গ্রেপ্তার করে ঝিনাইদহের আওয়ামী লীগ নেতা মিন্টু ও বাবুকে।
ওদিকে, ভারতীয় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার জিহাদ হাওলাদার সেখানে রয়েছেন। নেপালে আত্মগোপনে থাকা সিয়াম হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর কলকাতায় নেওয়া হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে পলাতক আছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আখতারুজ্জামান শাহীন। তিনিই এই খুনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ বলে দাবি করে আসছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।