সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার সাত আসামির মধ্যে ছয়জনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
সবশেষ বুধবার স্বীকারোক্তি দেন ফয়সাল আলী সাহাজী। কেবল ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্য দেননি।
ছয় দিনের রিমান্ড শেষে দুপুরে ফয়সালকে আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান। এরপর আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে ফয়সালের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এরপর আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
তবে জবানবন্দিতে ফয়সাল আলী সাহাজী কী বলেছেন বা কোন তথ্য দিয়েছেন সে সম্পর্কে কিছেই জানা যায়নি।
গত বুধবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মামলার দুই আসামি মোস্তাফিজ ও ফয়সাল আলী সাহাজীকে। ডিবির দাবি, এরা দুজনই কলকাতায় আনারকে খুনে সরাসরি জড়িত ছিলেন।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এমপি আনার হত্যায় ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে সাতজনকে। তাদের মধ্যে রয়েছেন সন্দেহভাজন আসামি ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু। তিনি জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনায় নিজের সংশ্লিষ্টতা এড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। বর্তমানে কারাগারে থাকা মিন্টু শুরু থেকেই নিজেকে ‘রাজনৈতিক হয়রানির’ শিকার বলে দাবি করে আসছেন।
আসামিদের মধ্যে স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর কারাগারে রয়েছেন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির নেতা শিমুল ভুইয়া, তার ভাতিজা তানভির ভূইয়া, শিলাস্তি রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান ফকির ও ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু। বুধবার স্বীকারোক্তি রেকর্ডের পর ফয়সাল আলী সাহাজীকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া, ভারতীয় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার জিহাদ হাওলাদার সেখানেই রয়েছেন। নেপালে আত্মগোপনে থাকা সিয়াম হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর কলকাতায় নেওয়া হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে পলাতক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আখতারুজ্জামান শাহীন। তিনিই এই খুনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
ঝিনাইদহ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনার গত ১২ মে কলকাতায় যাওয়ার পরদিনই কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিবা গার্ডেন্সের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন বলে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ২২ মে জানায়। তার লাশের সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ বলছে, হত্যার পর আনারের দেহ খণ্ড খণ্ড করে ছড়িয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন স্থানে।