Beta
শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫

আনার হত্যার তদন্তে হারুন এবার নেপালে

কলকাতায় বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হারুন অর রশীদ। ছবি : সংগৃহীত
গত ২৬ মে কলকাতায় বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হারুন অর রশীদ। ছবি : সংগৃহীত
[publishpress_authors_box]

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের তদন্তে কলকাতা ঘুরে আসার পর এবার নেপাল গেলেন গোয়েন্দা কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ।

বাংলাদেশের এই সংসদ সদস্য খুনে জড়িত অভিযোগে সিয়াম নামের এক যুবক নেপালে আটক হয়েছেন বলে খবর প্রকাশের মধ্যে তাকে জিজ্ঞাসাবাদসহ তদন্তের প্রয়োজনে তার এই যাত্রা বলে ডিবি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

শনিবার নেপালের উদ্দেশে রওনা হয় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল, ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুনের নেতৃত্বে।

যাওয়ার আগে ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হারুন নেপালে সিয়ামের আটক হওয়ার খবর সাংবাদিকদের জানান।

তিনি বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ আসামিদের মধ্যে অনেকে নেপালে রয়েছে বলে ধারণা করছি। ইদানিং বাংলাদেশের অনেক সন্ত্রাসী নেপালের কাঠমান্ডুর মাটিকে পালানোর রুট হিসেবে ব্যবহার করছেন।

“সংসদ সদস্য আনার হত্যার মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীন কাঠমান্ডুর মাটি ব্যবহার করে অন্য দেশে চলে গেছেন। আরও অনেক আসামি এখানে আত্মগোপনে থাকতে পারে বলে আমাদের কাছে খবর আছে।”

এই হত্যাকাণ্ডে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “সেগুলো ক্রসচেক করতে নেপাল যাচ্ছি।”

এক প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, সিয়ামসহ বেশ কয়েকজনের বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশ আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলকে চিঠি দিয়েছে। কাঠমান্ডু পুলিশকেও জানানো হয়েছে।

“যেসব আসামি নেপালে থাকবে, তাদের আটক করার জন্য আমরা তাদের অনুরোধ জানিয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা মামলার তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নেপাল পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।”

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার।

গত ১২ মে ভারতের যাওয়ার পরদিন কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে আনারকে হত্যা করা হয় বলে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ জানিয়েছে। তবে আনারের লাশের সন্ধান এখনও মেলেনি। খুনে জড়িত অভিযোগে কলকাতায় জিহাদ হাওলাদার নামে এক বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হয়েছেন।

হারুন বলেন, “কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার জিহাদকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। বাংলাদেশে আমাদের মূল আসামি কয়েকজন আছে। তাদের সঙ্গে তো কথাবার্তা হয়েছে। আর এমপি আনার হত্যায় জড়িতরা ছাড়াও অনেক অপরাধী কিন্তু কলকাতা রুটকে ব্যবহার করছে। সংসদ সদস্য আনার হত্যায় জড়িতরা যে কলকাতা রুট ও কাঠমান্ডু রুট ব্যবহার করেছে, সেটা আমরা কলকাতাকে যেমন বলেছি, নেপালকেও বলব।”

এদিকে ঢাকায় গ্রেপ্তার তিন আসামিকে দ্বিতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে গোয়েন্দা পুলিশ। তারা হলেন- শিমুল ভূইয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভূইয়া ওরফে আমানুল্যা সাইদ, তানভীর ভূইয়া ও শিলাস্তি রহমান।

এর আগে গত ২২ মে শেরেবাংলা নগর থানায় নিহত সংসদ সদস্যের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বাদী হয়ে একটি অপহরণ মামলা করেন। সে মামলাতেই আসামিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

অপহরণের এ মামলায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনারের ভারতে যাওয়ার তথ্য নেই। যদিও বাদি ডরিন একাধিবার বলেছেনে তার বাবা চিকিৎসার জন্য ১২ মে কলকাতায় যান। সেদিন তিনি উঠেছিলেন বরাহনগরের সিঁথি এলাকায় তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে।

কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জিবা গার্ডেনসের একটি ফ্ল্যাটে আনারকে খুন করার তথ্য দিয়েছেন গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা। ওই ভবনের সেপটিক ট্যাংক থেকে কিছু দেহাবশেষ উদ্ধার হলেও তা আনারের কি না, সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তদন্তের এ পর্যায়ে শনিবার ডিবি পুলিশ ও ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) একজন কর্মকর্তাসহ মোট চারজনের দল নেপালে গেছে। এর আগে ভারতে যাওয়া দলে সদস্য ছিলেন হারুনসহ তিনজন।

এদিকে এমপি আনার হত্যার তদন্তে এবার স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (এসআইটি) বা ‘সিট’ গঠন করেছে ভারতের সিআইডি। সিআইডির আইজি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে এই টিম। পাশাপাশি আছেন ডিআইজি পদমর্যাদার তিন জন কর্মকর্তা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে ইটিভি ভারতের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত