Beta
বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫

আনার হত্যা : আসামি হয়ে এক বছর আগে এলাকা ছাড়েন জিহাদ

জিহাদ হাওলাদার।
জিহাদ হাওলাদার।
[publishpress_authors_box]

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের খুনি হিসাবে কলকাতায় গ্রেপ্তার জিহাদ হাওলাদার এক বছর ধরে বাড়িছাড়া।

একটি অস্ত্র মামলায় আসামি হওয়ার পর তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।

কলকাতার নিউ টাউনের একটি ফ্ল্যাটে আনার খুন হন বলে গত ২২ মে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ নিশ্চিত হওয়ার পর সেখানে গ্রেপ্তার হন জিহাদ।

ভারতের পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খুনের পর আনারের লাশ খণ্ড-বিখণ্ড করার কাজটি জিহাদই করেছিলেন।

কলকাতার দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনে বলা হচ্ছে, আনারকে খুনের জন্য ৫ হাজার টাকা পেয়েছিলেন জিহাদ। জেরায় তিনি গোয়েন্দাদের বলেছেন, আনারের দেহ ৮০ টুকরো করে নিউ টাউন, ভাঙড় এলাকার নানা জায়গার জলাশয়ে ফেলে দেওয়া হয়।

আনারের লাশের খণ্ডাংশ উদ্ধারের জন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ জিহাদকে নিয়ে অভিযান চালাচ্ছে বলে সেদেশের সংবাদ মাধ্যমে খবর এসেছে। তবে শুক্রবার রাত পর্যন্ত লাশ উদ্ধারের নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।

জিহাদের বাড়ি খুলনার দীঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর গ্রামে। সেখানে তার বাবা জয়নাল হাওলাদার, মা, স্ত্রী মুন্নী বেগম ও দেড় বছরের পুত্র সন্তান থাকে।

স্ত্রী মুন্নী বেগম এরই মধ্যে জানতে পেরেছেন যে জিহাদ ভারতে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন।

তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, জিহাদ এক বছর আগে থেকে ঘরছাড়া। যশোরের কোনও একটি মামলায় তাদের বাড়িতে ডিবি পুলিশের অভিযান হওয়ার পর তিনি পালিয়ে যান। তার সেজ ভাই জাহেদ হাওলাদারও নিখোঁজ।

সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে, জিহাদ পালিয়ে ভারতে ঢোকার পর মুম্বাইয়ে গিয়ে থাকছিলেন। সেখান থেকে তাকে আনারকে খুন করার জন্য ভাড়া করে এনেছিলেন আক্তারুজ্জামান শাহীন।

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের শাহীন যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। যে ফ্ল্যাটে আনারকে খুন করা হয়, সেটি তিনি ভাড়া নিয়েছিলেন বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে, শাহীন কলকাতায় গিয়ে আনার হত্যাকাণ্ডের ছক সাজিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন ১০ মে। তারপর আবার বিদেশে পাড়ি জমান।

মুন্নী বেগম জানান, জিহাদের কারণে তার নিজের মা-বাবার সঙ্গে তার সম্পর্ক নেই। জিহাদের চার ভাই এর মধ্যে বড় দুই ভাইও তাদের খবর নেন না। শ্বশুর রংমিস্ত্রি জয়নাল হাওলদারের আয়ে তাদের সংসার চলে।

খুলনার দীঘলিয়ায় জিহাদ হাওলাদারের বাড়ি।


ওই গ্রামের বাসিন্দা নজরুল আকন্দ জানান, জিহাদও রংমিস্ত্রির কাজ করতেন। এলাকায় তার নামে কোনও অভিযোগ ছিল না। তবে কয়েক বছর আগে গ্রামের দুই পক্ষের মারামারির ঘটনায় তার নামে মামলা হলে তিনি গা ঢাকা দেন।

জিহাদের প্রতিবেশী মো. সোহেল জানান, স্থানীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মারামারির মামলায় গ্রামের অন্যান্য লোকের সঙ্গে জিহাদও জড়িয়ে গিয়েছিলেন। তারপর একটি ডাকাতির মামলায় জড়ান। তারপর একটি হত্যা মামলায়ও তিনি আসামি হন।

দীঘলিয়া থানায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২০ সালের এপ্রিল ও মে মাসে জিহাদের বিরুদ্ধে থানায় দুটি মারামারির মামলা হয়। এরপর ২০২৩ সালের জুন মাসে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে একটি মামলা হয়।

এছাড়া ঢাকায় একটি ডাকাতি এবং খুলনায় খানজাহান আলী থানায় একটি হত্যা মামলা আছে জিহাদের বিরুদ্ধে।

জিহাদের বাবা জয়নাল হাওলাদার সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, স্থানীয় মারামারিকে কেন্দ্র করেই তার ছেলে অপরাধে জড়িয়ে পড়েছিলেন।

আনার খুনে জড়িত থাকার অভিযোগ শুনে তিনি বলেন, “আমার ছেলে অপরাধী হলে ওর বিচার হোক। এমন ছেলে আমি চাই না, যে ছেলের জন্য মা-বাবার মুখ থাকে না, এমন ছেলে না থাকাই ভালো।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত