বয়সভিত্তিক ফুটবল থেকে শুরু। এরপর জাতীয় দলের জার্সিতে একসঙ্গে বেড়ে ওঠা। যেখানে হতাশায় বারবার ভারি হয়েছে হৃদয়। আর্জেন্টিনার সোনালি প্রজন্মের সবচেয়ে বড় প্রতিনিধি হয়েও তারা ফেরাতে পারছিলেন না সাফল্য। অবশেষে ২০২১ সালে এসে ব্যর্থতার গেরো খোলে। স্রোতধারায় আসতে থাকে একের পর সাফল্য। ২০২২ সালে ধরা দেয় কাঙ্ক্ষিত বিশ্বকাপও। লিওনেল মেসি ও আনহেল দি মারিয়া পূর্ণতার স্বাদ নেন অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে।
তারকাখ্যাতিতে মেসির অবস্থান অনেক উঁচুতে। সর্বকালের সেরাদের সঙ্গে যাকে রাখা হয়। দি মারিয়া হয়তো ওই পর্যায়ের নন। কিন্তু জাতীয় দলে মেসির শিরোপা খরা কাটানোর পথে সবচেয়ে বড় ভূমিকা এই উইঙ্গারের। ২০২১ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে মেসির জেতা প্রথম শিরোপা কোপা আমেরিকায়। মারাকানায় ব্রাজিলকে হারিয়ে আলবিসেলেস্তেদের শিরোপা উদযাপন হয়েছিল দি মারিয়ার সৌজন্যে। ফাইনালে একমাত্র গোলটি ছিল তার। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ ফাইনালেও ছিল দি মারিয়ার গোল।
আরও পেছনে ফিরে তাকালে ২০০৮ সালে অলিম্পিক ফুটবল থেকে মেসির জেতা সোনার পদকটাও এসেছিল ফাইনালে দি মারিয়ার গোলে। আন্তর্জাতিক ফুটবলে মেসির সাফল্য আলোচনায় আনলে তাই দি মারিয়াকে রাখতেই হবে। বয়সভিত্তিক ফুটবল থেকে গড়ে ওঠা তাদের বন্ধুত্ব এখনও অটুট। সেটা কতটা, দি মারিয়া বুঝিয়ে দিলেন এই কথায়- “মেসির সঙ্গে খেলতে পারাটা আমার ক্যারিয়ারের সেরা।”
২০২৪ সালের কোপা আমেরিকা জিতে আর্জেন্টিনা দলকে বিদায় বলেছেন দি মারিয়া। জাতীয় দলে মেসির সঙ্গে কাটিয়েছেন ১৬ বছর। আর্জেন্টিনা দলে তাদের সম্পর্ক কেমন ছিল, আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম ডিস্পোর্তস রেডিওকে দি মারিয়া বলেছেন, “আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সেরা বিষয় হলো, মেসির সঙ্গে খেলা। এটা জীবনের সবচেয়ে সেরা। অনেক বছর একসঙ্গে খেলে আমাদের যে বন্ধুত্ব হয়েছে… এই ছোট মানুষটি মাঠ ও মাঠের বাইরে বিস্ময়কর।”
ক্লাব ফুটবলেও মেসির সঙ্গে খেলেছেন দি মারিয়া। পিএসজির জার্সিতে খেলার সময়টাও এই উইঙ্গারের স্মৃতিতে গাঁথা। বার্সেলোনা ছেড়ে মেসির প্যারিসে যাওয়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছিলেন দি মারিয়া, “পিএসজিতে আমার শেষ ম্যাচের পর ওকে (মেসি) বলেছিলাম, ‘আমাকে তোমার সঙ্গে এভাবে খেলতে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ’। যখন সে বার্সেলোনা ছাড়ল, আমি ও লিয়ান (পারেদেস) বলেছিলাম প্যারিসে এসে আমাদের সঙ্গে খেলো।”
সঙ্গে যোগ করেছেন, “বার্সেলোনায় যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তবে আমি সবসময় চাইতাম ওর সঙ্গে খেলতে। ওই বছরটা আমার জন্য অন্যরকম ছিল।”
দি মারিয়া আর্জেন্টিনাকে বিদায় বলেছেন। তবে মেসি এখনও খেলছেন। কতদিন খেলবেন, মেসি নিজেও জানেন না। হয়তো ২০২৬ বিশ্বকাপ!