সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুরে ছাত্রলীগ কর্মীদের ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় আরেকটি মামলা হয়েছে।
ওই ঘটনায় গুরুতর আহত ছাত্রলীগের এক কর্মী রবিবার হত্যাচেষ্টার অভিযোগে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ নিয়ে ওই ঘটনায় পাঁচটি মামলা দায়ের হলো। সর্বশেষ মামলায় ৫০ জনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি আরও ৩০ থেকে ৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
গত ১৬ জুলাই নগরীর মুরাদপুরে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র ব্যানারে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে তাদের সঙ্গে যুবলীগ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়। সেদিন ঘটনাস্থলেই নিহত হয় তিনজন।
সংঘর্ষের এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মুরাদপুরের বেলাল মসজিদের পাশে পাঁচতলা ভবন মিরদাদ ম্যানশনের ছাদে গিয়ে আশ্রয় নেয়। পরে ওই ভবনের ছাদ থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ফেলে দেওয়ার কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে।
সেই ঘটনায় ছাত্রলীগের ৩০ জনের বেশি নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ভুক্তভোগীরা বাদী হয়ে এর আগে চারটি মামলা করেন। ঘটনার ১২ দিন পর রবিবার দায়ের করা হয় পঞ্চম মামলাটি।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) পাঁচলাইশ জোনের সহকারী কমিশনার মো. আরিফ হোসেন বলেন, “মুরাদপুরের একটি ভবনের ছাদ থেকে পাঁচ ছাত্রলীগকর্মীকে ফেলে হত্যাচেষ্টার পাঁচ মামলায় এ পর্যন্ত ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবারের মামলায় নাম উল্লেখ থাকায় গ্রেপ্তার করা সহজ হবে।”
এদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত, প্রাণহানি ও নাশকতার ঘটনায় নগরীতে এ পর্যন্ত ২০টি মামলা দায়ের হয়েছে। আর চট্টগ্রাম মহানগরীর বাইরে জেলায় মামলা হয়েছে ১১টি। মোট ৩১ মামলায় এ পর্যন্ত ৮৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে নগরীতে ৫১৬ জন এবং নগরীর বাইরে জেলার অন্যান্য স্থানে ৩৮১ জন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ জানান, নগরে কোটাবিরোধী আন্দোলনে হত্যা, দাঙ্গা, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও নাশকতার ২০ মামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০ জনসহ মোট ৫১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
১৬ জুলাই থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে সংঘর্ষে চট্টগ্রামে সাতজন নিহত ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়।