সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে যে আপিল আবেদন হয়েছে, তার শুনানি এগিয়ে রবিবারে আনা হয়েছে।
আগামী ৭ অগাস্ট এর শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সংঘাতময় আন্দোলনের কারণে শুনানির তারিখ এগিয়ে আনার আবেদন করার কথা বৃহস্পতিবার বিকালেই জানিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
এরপর সন্ধ্যায় আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে রবিবার শুনানির দিন ঠিক করে দেন।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের রবিবারের কার্যতালিকায় দেখা গেছে, এই মামলাটি রয়েছে ৩ নম্বরে।
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে আগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত ছিল। ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের এক আন্দোলনের মুখে সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরিতে কোটা তুলে দিয়ে পরিপত্র জারি করে।
সেই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালে আবেদন করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। গত ৫ জুন হাইকোর্ট সেই মামলার রায়ে সব কোটা পুনর্বহাল করে। তবে রায়ে বলা হয়, সরকার চাইলে কোটার হার পুনর্বিন্যাস করতে পারবে।
সরকার ওই রায় স্থগিতে আবেদন করলেও এরই মধ্যে নতুন করে আন্দোলন শুরু হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানারে।
আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় স্থগিত না করলেও স্থিতাবস্থা জারি করে। সেই সঙ্গে সরকার আপিল আবেদন করার পর ৭ অগাস্ট শুনানির দিন ঠিক করে।
কিন্তু জুলাইয়ের প্রথমে রাজপথে আন্দোলন শুরুর পর ক্রমেই তা তীব্রতা পায়। গত মঙ্গলবার এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে সংঘাতে ছয়জন নিহত হয়।
এরপর প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে শিক্ষার্থীদের আদালতের রায় অবধি অপেক্ষা করতে অনুরোধ করলেও তাতে সাড়া মেলেনি।
বৃহস্পতিবার সহিংসতা আরও বেড়ে যাওয়ার মধ্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের আলোচনায় আসার প্রস্তাব দেন।
তিনি তখন বলেছিলেন, “শুনানি এগিয়ে আনার জন্য ব্যবস্থা নিতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছি। আগামী রবিবার তিনি আপিল বিভাগে আবেদন করবেন, যাতে মামলাটির শুনানির তারিখ তারা এগিয়ে আনেন।”
তিনি আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করে আরও বলেছিলেন, “উচ্চ আদালতে যখন এই মামলার শুনানি শুরু হবে, সরকার পক্ষ অবশ্যই একটা প্রস্তাব দেবে। এবং আমরা যেহেতু কোটা সংস্কারের পক্ষে, সংস্কারের পক্ষে প্রস্তাব দেব।”
তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সর্বোচ্চ আদালত শুনানির দিন এগিয়ে আনল।