ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় রাজধানী ঢাকার উত্তরায় আলী হুসেন নামে এক ব্যক্তি গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ১৮৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাগীব নুরের আদালতে আলী হুসেনের আত্মীয় পরিচয়ে মফিজুল ইসলাম সানা আবেদনটি করেন। মামলার আবেদনে আরও ৭০০-৮০০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী জাকির হোসেন জানিয়েছেন, আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে এ ঘটনায় আর কোনও মামলা আছে কিনা- বা কোনও তদন্ত চলছে কিনা- তা ২০ কর্মদিবসের মধ্যে উত্তরা-পূর্ব থানা পুলিশকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে।
আসামির তালিকায় আরও আছেন সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য খসরু চৌধুরী, হাবিব হাসান, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিবি কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ, বিপ্লব কুমার সরকার।
অভিযোগে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কার দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে গত পহেলা জুন দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে অবস্থান, বিক্ষোভ ও অবরোধসহ বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালিত হয়। যার ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে ১৮ জুলাই ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
এই কর্মসূচিতে অংশ নেন আলী হুসেন। সেই আন্দোলন দমাতে আসামিরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে অবস্থানরত আলী হুসেনকে গুলি করে। পেট, বুক ও মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে মহাসড়কের পড়ে থাকেন আলী হোসেন। পরে কোনও এক সময়ে উপস্থিত ছাত্র-জণতা তাকে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ছাত্র-জনতার ওই আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের। তারপর থেকে তিনি ভারতে রয়েছেন। দলটির অনেক কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন; অনেকে এখনও আত্মগোপনে আছেন।